ঊষার আলো ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী বেড়েছেই চলেছে সাইবার হামলা। এই হামলা মোকাবিলায় বাংলাদেশ-ভারতকে একসাথে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তার মতে, প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এর ঝুঁকি কমাতে আন্তঃযোগাযোগ বাড়িয়ে ই-গভর্নেন্স নিশ্চিতের বিকল্প নেই।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে সাইবার মৈত্রী ২০২৩ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা জানান। এসময় প্রণয় ভার্মা জানান, গেলো দুই দশকে প্রযুক্তি খাতে অনেক এগিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এগুলোতে ঝুঁকিও অনেক বেশি। প্রযুক্তির নিত্য নতুন পরিবর্তনের সঙ্গে বাংলাদেশ যাতে খাপ খাওয়াতে পারে সেজন্য ভারত সব ধরণের সহায়তা করবে। তিনি আরও জানান, এরই মধ্যে হাইটেক পার্ক, দক্ষ জনবল তৈরিতে প্রশিক্ষণ নিশ্চিতসহ দুই দেশ যৌথভাবে বেশ কিছু কাজ শুরু করেছে ।
অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, এ মাসে বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিস সেন্টার চালু হবে ভারতের উদ্যাগে। এর পাশাপাশি সারাদেশে ৬৪টি প্রযুক্তি খাত বিষয়ক ট্রেনিং সেন্টার করা হবে। যেখানে শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষা হাতে-কলমে নিতে পারবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাইবার স্পেসকে ব্যবহার করে আর্থিক খাতসহ যে কোনো খাতে কোনো হামলা যেন সংগঠিত না হয় সেজন্য সরকার ভারতের সঙ্গে মিলে সব রকম সর্তকীকরণ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি মন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সাথে ঢাকায় ৪ অক্টোবর ২০২৩-এ বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত “সাইবার মৈত্রী ২০২৩” এর সমাপনী অধিবেশনে যোগদান করেন। সাইবার-মৈত্রী হলো ভারত ও বাংলাদেশের সেক্টর বিশেষজ্ঞবৃন্দ ও প্রফেশনালগণের জন্য একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম ও ইন্টারফেস যার লক্ষ্য সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের জন্য সহযোগিতা প্রদান করা।
হাই কমিশনার এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমাবেশের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদানকালে জোর দিয়ে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই তাদের অর্থনীতি, সমাজ ও শাসনব্যবস্থার বৃহত্তর ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় এবং আমাদের উভয় দেশের তরুণ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী জনগণ তাদের সকল কর্মকাণ্ডের জন্য ডিজিটাল স্পেস ব্যবহারের ব্যাপারে ক্রমবর্ধমানভাবে এগিয়ে যাওয়ার ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। তিনি উল্লেখ করেন যে, সাইবার-মৈত্রী ২০২৩ জ্ঞানের আদান-প্রদান, সক্ষমতা বৃদ্ধি, সাইবার স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করা, নেটওয়ার্কজনিত দুর্বলতাসমূহ চিহ্নিত করা ও মোকাবিলা করা, সাইবার ঝুঁকি মূল্যায়নের প্রস্তুতি এবং সামগ্রিকভাবে সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক। হাই কমিশনার বলেন, এই সকল বিষয়ই উভয় দেশের সেক্টর বিশেষজ্ঞদেরকে ডিজিটাল স্পেস রক্ষা করতে এবং বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানুষে-মানুষে সম্পৃক্ততা বাড়াতে ডিজিটাল প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহারকে আরও কার্যকর করে তুলতে সহায়তা করবে। তিনি যোগ করেন, সাইবার-মৈত্রী ২০২৩-এর মতো এই যৌথ সহযোগিতামূলক অনুশীলনসমূহ ভারত ও বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞগণকে সাইবার নিরাপত্তা, এআই, আইসিটি ও আইটিবিষয়ক মানবসম্পদ উন্নয়নের মতো বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের সমস্যা মোকাবিলা করতে সক্ষম করেছে। এই বিষয়গুলো ডিজিটাল কানেক্টিভিটি অর্জন এবং উভয় দেশের তরুণদের ভবিষ্যৎ আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য অবিচ্ছেদ্য, যোগ করেন তিনি।
ঊআ-বিএস