UsharAlo logo
শনিবার, ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বপ্ন নিয়ে কাল যাচ্ছে আমিরাতে

usharalodesk
সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪ ১২:১১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ক্রীড়া ডেস্ক :সব দুষ্টামি যেন জমিয়ে রেখেছিলেন নিগার সুলতানা। যার বেশির ভাগজুড়ে তাঁর সতীর্থরা। কখনো মারুফা আক্তার তো কখনো সাথি রানী হয়ে মুর্শিদা খাতুন—বাংলাদেশ অধিনায়কের খুনসুটির শিকার হননি কে!

উপলক্ষ নারীদের আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে বাংলাদেশ দলের ফটোসেশন, সংবাদ সম্মেলন এবং উন্মুক্ত মিডিয়া সেশন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামজুড়ে একটা উৎসব-উৎসব আমেজ।

আকর্ষণের কেন্দ্রে অবশ্যই বাংলাদেশ নারী দল। নিশ্চিতভাবে খুব বেশি এমন দিনের সাক্ষী হননি নারী দলের ক্রিকেটাররা। মঞ্চটা আরো বিস্তৃত করতে পারেন মেয়েরাই। তার জন্য করণীয় কাজটা নিশ্চয়ই অজানা নয় নিগারদের।

এবার নিয়ে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলতে যাবে বাংলাদেশ। বিশ্ব মঞ্চে একেকটি জয় তৈরি করবে উদযাপনের নতুন উপলক্ষ।

ঘরের মাঠে ২০১৪ বিশ্বকাপের দুটি জয়ই এখন পর্যন্ত মেয়েদের সেরা সাফল্য। গত ১০ বছরে আরো চারটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের ফলাফল শূন্য।

জয়হীন এত বিশ্বকাপ কাটিয়ে দেওয়া অবশ্যই পীড়াদায়ক। নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার তাড়না তাই ক্রিকেটারদের চোখেমুখে। তার আগে অবশ্য ‘প্রথম’ জয়ের গেরোটা খুলতে চান নিগার, ‘প্রথমত ম্যাচ জিততে চেষ্টা করব। ২০১৪ ছাড়া আর কোনো বিশ্বকাপে আমরা একটি ম্যাচও জিততে পারিনি। ভালো ক্রিকেট খেলেছি।

তবে ভালো ক্রিকেট খেলার কোনো মানে নেই, যদি আপনি ম্যাচ জিততে না পারেন। প্রথমত তাই ম্যাচ জিততে চাই।’ প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড বলে চাওয়ার তীব্রতাও স্পষ্ট। এই ম্যাচটা জিততে পারলেই লক্ষ্যপূরণ হয়ে যায় নিগারদের।

তাই বলে এটা ভাবার কারণ নেই যে এই একটা ম্যাচ জিততেই মরুর দেশে বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আরো একটা ধাপের স্বপ্ন দেখছেন নিগার। সেই স্বপ্ন সেমিফাইনাল, ‘যখন আমরা ছন্দ পাব, আমার কাছে মনে হয় আমাদের যে দল…সেমিফাইনাল কে না খেলতে চায়। আমাদেরও লক্ষ্য থাকবে তেমন কিছু করা।’ বিশ্বকাপে ভালো করতে চাওয়ার আরো একটা কারণের কথা শুনিয়েছেন নিগার, ‘আমাদের ক্রিকেট যদি এক ধাপ এগিয়ে নিতে চাই, তাহলে বিশ্বকাপের চেয়ে বড় জায়গা আর হতে পারে না। ওখানে ভালো করলে আমাদের মেয়েদের ক্রিকেট, শুধু আমরা নই, বাকি যে মেয়েরা বাংলাদেশের জার্সি গায়ে খেলতে চায় বা স্বপ্ন দেখে যে বাংলাদেশের হয়ে বড় কিছু করবে, তাদের জন্য আমরা ভালো কিছু করতে চাই।’

বড় কিছু করার রাস্তাটা সহজ নয় বাংলাদেশের। শুরুতে সহযোগী দেশ স্কটল্যান্ড থাকলেও পরের তিন ম্যাচ খেলতে হবে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচের ভেন্যু শারজাহ, যেখানে স্পিন সব সময় বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এই দুই ম্যাচে নিগারের ‘বাজির ঘোড়া’ রাবেয়া খান, নাহিদা আক্তার ও সুলতানা খাতুনরা। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচটি দুবাইয়ে। এই ম্যাচে সুখস্মৃতিই বাংলাদেশের অনুপ্রেরণা। নিগার তাই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে জোর দিচ্ছেন, ‘প্রতিটি ম্যাচের আগে যদি ওই দলের প্রতি বেশি মনোযোগ দিই এবং আমাদের ম্যাচ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি, আমাদের জন্য ভালো হবে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে এসেছি টি-টোয়েন্টিতে (তাদের দেশে), এটা ভালো অভিজ্ঞতা। ইংল্যান্ডের সঙ্গে শুধু বিশ্বকাপে দেখা হয় এবং তা-ও খুবই কম। আমাদের জন্য নতুন প্রতিপক্ষ। তবে ওদের জন্যও কঠিন হতে পারে। শারজাহতে খেলা, আমাদের স্পিন ভালো (হাসি)। যেকোনো কিছু হতে পারে।’

নিগারের চেয়ে বাংলাদেশ দলের কোচ হাসান তিলেকরত্নের আত্মবিশ্বাসের অবশ্য স্কেল অনেক ওপরে, ‘আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী, এই দলে ভেতর সব উপকরণই আছে (সেমিফাইনাল খেলার)। অনেক দূর যাওয়ার সামর্থ্য এই দলের আছে।’

 প্রথমত ম্যাচ জিততে চেষ্টা করব। ২০১৪ ছাড়া আর কোনো বিশ্বকাপে আমরা একটি ম্যাচও জিততে পারিনি।

নিগার সুলতানা (অধিনায়ক)
দল আমার কাছে কিছু আশা করলে সেটা চাপ মনে না করে অনুপ্রেরণা হিসেবে নেওয়ার চেষ্টা করি।

নাহিদা আক্তার (সহ-অধিনায়ক)
এটা নিয়ে আমরা ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলব। এই বিশ্বকাপটা আমাদের জন্য একটু কঠিন হতে যাচ্ছে।

জাহানারা আলম (পেসার)
বিশ্বকাপ যেহেতু বড় মঞ্চ আমি আমার সেরাটা দিয়ে ভালো কিছুর চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।

মারুফা আক্তার (পেসার)
আমি যেহেতু অলরাউন্ডার, অবশ্যই বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে দলের জন্য আমার অবদান রাখা উচিত।

রাবেয়া খান (স্পিনার)
দল আমার কাছে অনেক বেশি প্রত্যাশা করলেও ব্যাপারটা আমি উপভোগ করি। নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত রাখি।

ফাহিমা খাতুন (অলরাউন্ডার)
শ্রীলঙ্কায় সর্বশেষ সিরিজে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যাটিং করেছি। আশা করি, এটা বিশ্বকাপে আমাকে সহায়তা করবে।

সোবহানা মোস্তারি (ব্যাটার)
নিজের জায়গা থেকে পরিশ্রম করে যাওয়ার চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতের জন্য দলে নিজের ছাপ রেখে যেতে চাই।

দিশা বিশ্বাস (অলরাউন্ডার)
বিশ্বকাপ অনেক বড় মঞ্চ। সবারই স্বপ্ন থাকে দলের জন্য ভালো কিছু করার। আমিও অবদান রাখতে চাই।

মুর্শিদা আক্তার (ব্যাটার)
একজন ব্যাটারের অনেক রকম ভূমিকা থাকে। আমি আমার ব্যাটিং নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, দলের জন্য ভালো কিছু করতে পারব।

রিতু মনি (অলরাউন্ডার)
আমি কখনো চিন্তাই করতে পারিনি সরাসরি এভাবে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাব। সুযোগ পাওয়ার পর আনন্দ লেগেছে।

তাজ নেহার (ব্যাটার)
আমি ইনিংস লম্বা করা নিয়ে কাজ করছি। কোচের সঙ্গেও কথা হয়েছে। আশা করি, এবার বড় ইনিংস খেলতে পারব।

দিলার আক্তার (উইকেটকিপার-ব্যাটার)
বোলিংয়ের মতো ব্যাটিংয়েও আমার ওপর একটা দায়িত্ব থাকে। আমি সব সময় চেষ্টা করি সেটা পূরণ করার।

স্বর্ণা আক্তার (অলরাউন্ডার)
আমার দায়িত্ব হচ্ছে দলের জন্য ভালো বোলিং করে দেওয়া। শুরুতে উইকেট নিতে পারলে দলের জন্য সহজ হয়।

সুলতানা খাতুন (স্পিনার)
আমি যখন খেলা শুরু করি তখন থেকে লক্ষ্য ছিল দ্রুত রান করা। এখন পর্যন্ত ভালো ছন্দে আছি।

ঊষার আলো-এসএ