UsharAlo logo
সোমবার, ৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেড়শ বছরের পুরোনো রেলস্টেশনের উন্নয়নে আন্দোলন

ঊষার আলো ডেস্ক
অক্টোবর ৬, ২০২৪ ৮:৩২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

দেড়শ বছরের পুরোনো রংপুর বিভাগীয় রেল স্টেশনটিতে লাগেনি কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া। দফায় দফায় আন্দোলন-সংগ্রাম করেও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে উত্তরের এই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনটি। সব ছাপিয়ে বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবার দৃশ্যমান উন্নয়ন বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর রেল স্টেশনে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে পার্বতীপুরগামী লোকাল এলআর ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধিসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এ সময় রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের উন্নয়নে বৈষম্য দূরীকরণ করাসহ বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী ও বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার আব্দুস সালামের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৮৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত রংপুর রেলওয়ে স্টেশনে একবার মাত্র দায়সারাভাবে উন্নয়ন কাজ হয়েছিল ১৯৪৪ সালে। এরপর শত বছর পেরিয়েও আর কোনো উন্নয়ন হয়নি স্টেশনটিতে। পদে পদে যাত্রীদের ভোগান্তি আর বেহাল দশার অপর নামে পরিচিত এখন এই স্টেশনটি।

নেই যাত্রী ছাউনি, পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ, দ্বিতীয় প্ল্যাটফর্মে যাতায়াতের ব্যবস্থাসহ স্টেশনটির বাউন্ডারি ওয়াল। বারবার রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও অজানা কারণে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে উত্তরের মানুষ।

এ সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানসহ উপদেষ্টাদেরকে রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের উন্নয়ন বৈষম্য দূর করতে সুদৃষ্টি দেওয়ার দাবি করেন বিক্ষুদ্ধরা। অন্যথায় আগামী দিনে রেল স্টেশনের উন্নয়নের দাবি আদায়ে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ করে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধিরা আরও বলেন, উত্তরের কোটি মানুষের ট্রেন যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন রংপুর। অন্য লাইনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন স্থাপন হলেও রংপুর সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আমরা আর বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকতে চাই না। দ্রুত রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের সংস্কার করে আধুনিকায়ন করাসহ এই‌ স্টেশনের ওপর দিয়ে নূন্যতম আরও দুটি আন্তঃনগর ট্রেন বরাদ্দ এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

তারা অভিযোগ করে বলেন, রংপুর রেলওয়ে স্টেশন প্লাটফর্মে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত ফ্যান নেই, লাইট নেই, ভালমানের শৌচাগার নেই। বৃষ্টি হলে প্লাটফর্মে পানি পড়ে। রেল স্টেশনের চারদিকে খোলা থাকার কারণে সবার অবাধ প্রবেশ রয়েছে। এতে করে প্রায় সময় চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে। বিগত সময়ে অনেক দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা স্টেশনে এসে উন্নয়নের কথা বলেছে।

অথচ প্লাটফর্ম উঁচুকরণ ছাড়া রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। এখানে যাত্রীর অনেক চাপ থাকে। অথচ ঢাকাগামী রেল মাত্র ২টি। সেই ট্রেনেরও টিকিট পাওয়া যায় না।

এ ছাড়াও রেল উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থ নিয়ে দুর্নীতি করা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্রুত অপসারণের দাবি জানান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধিরা। বিক্ষোভ ও মানববন্ধন সমাবেশ শেষে রেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দাবি আদায়ের স্মারকলিপি প্রদান করেন আন্দোলনকারীরা। ঘণ্টাব্যাপী চলা কর্মসূচিতে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের উন্নয়ন বৈষম্য দূরীকরণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির বিষয়ে স্টেশন সুপারিনটেন্ট শংকর গাঙ্গুলী বলেন, ছাত্ররা স্টেশনে এসে তাদের দাবির বিষয়গুলো জানিয়েছে। রংপুর স্টেশনের যাবতীয় উন্নয়নের কাজের বরাদ্দ পাস হয়েছে কয়েক মাস আগে। সরকার পরিবর্তনের পর এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাজগুলো থমকে আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই রংপুরকে একটি আধুনিক মডেল স্টেশনে রূপ দেওয়ার কাজ শুরু হবে।

আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মুসতাক তাহমিদ নিলয়, নাহিদ হাসান খন্দকার, ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি, জুবায়ের আহম্মেদ হিম, মুহম্মদ রাজিমুজ্জামান হৃদয়, নাবিল আহমেদ রোহিত প্রমুখ।