ঊষার আলো রিপোর্ট : ভাগ্য বদলের আশায় প্রায় ৩০ বছর আগে গাজীপুর এসেছিলেন শেরপুরের কামাল হোসেন ওরফে কমল। জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম কামাল হোসেন হলেও সবাই তাকে ডাকেন কমল নামে। কমলের পৈতৃক ভিটা শেরপুরে হলেও গাজীপুরে থাকার সুবাদে ভোটার আইডি কার্ডে ঠিকানা গাজীপুর সিটি করপোরেশন মধ্যপাড়া এলাকায়। গাজীপুরে এসে প্রথমে থাকার জায়গা না থাকলেও এখন তিনি থাকেন নিজস্ব দোতলা বাড়িতে। জীবিকার তাগিদে প্রথমে রিকশা চালালেও পরে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) গাজীপুর সার্কেলে দালালি করে বনে গেছেন বাড়ি, গাড়ি, জমির মালিক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, পদ পাওয়ার পরই কমল শহরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার ফেস্টুন টানিয়ে দেন। পদ পাওয়ার পর নিজের নাম এবং ফোন নম্বর দিয়ে ভিজিটিং কার্ড ছাপান কমল। এরপর গাজীপুর বিআরটিএসহ নিজের ভিজিটিং কার্ড বিভিন্ন স্ট্যান্ডের সিএনজি অটোরিকশচালকদের কাছে ছড়িয়ে দেন। পূর্বে স্ট্যান্ডে কাজ করার পরিচিতি এবং শ্রমিক লীগের পদ পাওয়ায় কমলের ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস এবং মালিকানার কাজও বেড়ে যায়।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, কমল প্রতিদিন গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন চায়ের দোকানের পাশে অবস্থান করেন। এছাড়া সার্বক্ষণিক গাজীপুর বিআরটিএ অফিস এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রুম দাপিয়ে বেড়ান। প্রতিদিনই দেখা যায় কমল গাড়ির বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে বিআরটিএ অফিসে যাতায়াত করেন। এছাড়া চায়ের দোকানের পাশেই এসব কাজের লেনদেন করেন। কমলের সিএনজি অটোরিকশার কাগজ করে দেওয়ার একটি ভিডিও এসেছে প্রতিবেদকের কাছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, শহরের রাজদীঘি পাড়ে একজন চালকের কাছ থেকে সিএনজি অটোরিকশার কাগজপত্র হাতে নিয়ে দেখছেন। পরে কত টাকায় করবেন সে বিষয়ে ফয়সালা করে কাগজ নিয়ে চলে যান বিআরটিএ অফিসে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন হলেও কমলের দাপট রয়েছে আগের মতোই। প্রতিদিন বিভিন্ন কাজ নিয়ে কমলের বিআরটিএ অফিসে যাতায়াত চলছেই।
জানতে চাইলে কমল বলেন, ‘আমার ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করে কিশোরগঞ্জের একজন সিএনজি অটোরিকশার নম্বর করে নিয়ে গেছেন।’বিপুল সম্পদ থাকার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে তিনি বলেন, শেরপুরে মায়ের জমি বিক্রি করে বাড়ি করেছেন আর ব্যাংক লোন নিয়ে এলিয়েন গাড়ি কিনেছেন।
ঊষার আলো-এসএ