UsharAlo logo
বুধবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উচ্ছেদ হচ্ছে মধুমতি মডেল টাউন

usharalodesk
ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪ ১১:২০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে সাভারের মধুমতি মডেল টাউন আবাসিক প্রকল্পটি উচ্ছেদে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত আমলে নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। মেট্রো মেকার্স গ্রুপ এই প্রকল্পের স্বত্বাধিকারী। নানান বিতর্ক ও আদালতের মামলার কারণে বিতর্কিত এই প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে নান্দনিক হাউসিং করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবে রাজউক।

সাভারের বিলামালিয়া ও বেইলারপুর মৌজায় স্থাপিত এই প্রকল্পটি উচ্ছেদে করণীয় বিষয়ক এক আন্তঃসংস্থা সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ১৮ ডিসেম্বর রাজউক মিলনায়তনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন,  রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার।

রাজউকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ ও প্রটোকল) মো. আব্দুল্লাহ আল মারুফের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে  জানানো হয়, মধুমতি মডেল টাউন আবাসিক প্রকল্পে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর বিষয়ে সভায় উচ্ছেদ বিষয়ে উপস্থিত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা একমত পোষণ করেছেন। অভিযানকালে ঢাকা জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, পরিবেশ অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর রাজউককে সার্বিক সহায়তা করার ঘোষণা দিয়েছে।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ওই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।  ভবিষ্যতে রাজউকের অনুমোদন ছাড়া ওই স্থাপনায় বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ঢাকা জেলা প্রশাসন জানায়, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমানে ওই মৌজায় সব ধরনের নামজারি ও খাজনা আদায় বন্ধ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের রায় মেনে মধুমতি মডেল টাউন আবাসিক প্রকল্পে আমরা চলতি সপ্তাহে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালাবো। উচ্ছেদের আগে সেখানে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে যেন এই জলাভূমি উদ্ধার করা যায়, সেই লক্ষ্যে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করব।

জানা গেছে,  মেট্রো মেকার্স অ্যান্ড ডেভেলপার্স লি. আমিনবাজারের বিলামালিয়া ও বালিয়ারপুর মৌজায় জলাভূমি ভরাট করে ‘মধুমতি মডেল টাউন’ প্রকল্পটি গড়ে তোলে। এটি রাজউকের ড্যাপে (২০২২-২০৩৫) বন্যা প্রবণ এলাকা ও মুখ্য জলস্রোত অববাহিকা হিসেবে চিহ্নিত করা। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট পিটিশন মামলা দায়ের করে। মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে উচ্চ আদালত ‘মধুমতি মডেল টাউন’ প্রকল্পকে অবৈধ ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে জমির শ্রেণি ভরাটকৃত বালু সরিয়ে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে বন্যাপ্রবাহ এলাকা রক্ষার নির্দেশ দিয়ে রায় দেন। পরবর্তীতে মেট্রো মেকার্স অ্যান্ড ডেভেলপার্স লি. ও প্লট মালিক সংগঠন ২০১২ সালের ৭ আগস্ট আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য ৫টি আবেদন করে আপিল বিভাগে। ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল তাদের আবেদন খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। ফলে পূর্বের রায় বহাল থাকে। সেই প্রেক্ষিতে গত ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশ পরিবেশ আইন সমিতি (বেলা) রাজউক চেয়ারম্যানকে একটি উকিল নোটিশ দেয়। সেই নোটিশের প্রেক্ষিতে মধুমতি টাউন আবাসিক প্রকল্প এলাকায় উচ্ছেদ চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর পরই ২১ ডিসেম্বর মধুমতি প্রকল্পে বসবাসকারী শতাধিক পরিবার ও তাদের সমিতির নেতারা ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে উচ্ছেদ অভিযান না চালানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে।

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার রাজউকের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান,  রাজউক থেকে উচ্ছেদ না করার বিষয় কোনো সিদ্ধান্ত দেয় নাই। ফলে চলতি সপ্তাহেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।

ঊষার আলো-এসএ