UsharAlo logo
বুধবার, ২৬শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনায় অর্ণব ও ইমন হত্যার রহস্য উন্মোচন

ঊষার আলো প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫ ১০:২৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কেএমপি’র প্রেস ব্রিফিং

গত ২০ ফেব্রুয়ারি ছুরিকাঘাত খুলনায় আল-আমিন শেখ ওরফে ইমন ও ২৪ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অর্ণব সরকারকে গুলি করে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে রহস্য উদঘাটন হয়েছে। এর মধ্যে স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে আল-আমিন শেখ ওরফে ইমনকে ছুরিকাঘাতে এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অর্ণব কুমার সরকারকে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রে করে প্রতিপক্ষরা  গুলি করে হত্যা করে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে সাড়ে ৫টায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরে এক প্রেসবিফ্রিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন কেএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ( ক্রাইম এ- অপারেশন) মো: কুতুব উদ্দিন। প্রেসবিফ্রিংয়ে তিনি বলেন, নিহত আল-আমিন শেখ ওরফে ইমনের স্ত্রীর সাথে খুলনা বড় বাজারের ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সাহার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি ইমন জেনে ফেলে। তখন ইমন ফোনে বিশ্বজিৎ সাহাকে কড়া ভাষায় গালাগালি করে। এর ফলে ইমনকে শায়েস্তা করার জন্য বিশ্বজিৎ সাহা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তার ব্যবসার প্রতিষ্ঠানের পূর্বের কর্মচারি নাইম ও মুন্সিকে ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করে। ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টায় বিশ্বজিৎ সাহা, নাইম ও মুন্সী ট্রাক স্ট্যান্ড কাঁচা বাজারের সামনে উপস্থিত হন। এ সময় আল আমিন ওরফে ইমন মোটরসাইকেল যোগে সোনাডাঙ্গা থানাধীন ২২ তলার সামনে এসে পৌছালে বিশ্বজিৎ সাহা ইমনকে চিনিয়ে দিয়ে মটরসাইকেল চালানোর অবস্থায় নাইম ও মুন্সী আল আমিন ওরফে ইমনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আল আমিনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যওু চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরের দিন ২১ ফেব্রুয়ারি নিহত ইমনের ভাই রাজিবুল ইসলাম বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ হত্যাকাণ্ডে বিশ্বজিৎ সাহাকে পূর্ব বানিয়াখামার লোহার গেট এলাকা থেকে আটক করা হয়। সে ওই এলাকার বাসিন্দা মৃত মতিলাল সাহার পুত্র। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।
অপরদিকে গত ২৪ জানুয়ারি খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন তেতুলতলা মোড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অর্ণব কুমার সরকারকে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়েছে উল্লেখ করে প্রেস বিফ্রিংয়ে বলা হয়, ইতিমধ্যে অর্ণব হত্যা মামলায় ৯ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছেন। গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে সন্ত্রাসী ইনসান শরীফকে ১টি ওয়ান শুটার গান, ২ রাউন্ড গুলি এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ১টি মটরসাইকেল আটক করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের মধ্যে শাহরিয়া সজল ও মাহিন হোসেন শুভ অর্ণব সরকার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। বাকী আসামিরা বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান না করলেও পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং মামলার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে। খুলনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবু ও কালা লাবলু-পলাশ গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। নিহত অর্ণব কালা লাবলু-পলাশের বন্ধু-বান্ধব ছিলো বলে প্রেস বিফ্রিংয়ে উল্লেখ করা হয়। আলোচিত অর্ণব সরকরা হত্যা মামলার গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন, মো: গোলাম রব্বানী (২৬), রমজান শেখ (২৯), জাহিদুল ইসলাম তুরান (২০), সাইফুল গাজী (৩২), জাহিদুল ইসলাম রাজ ওেেফ রাজ উজ্জামান রাজু ওরফে রিপন ইসলাম গালকাটা রাজু (৩৫), ইউনুস হাওলাদার (২৯), ইনসান শরীফ (২৯), আতিক হাসান ওরফে বান্না (২৫), শাহরিয়া সজল (২২) এবং মাহিন হোসেন শুভ (২১)। প্রেসবিফ্রিংয়ে কেএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার ( দক্ষিণ) শেখ মনিরুজ্জামান মিঠুসহ পুলিশ অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন।

ঊআ-বিএস