UsharAlo logo
বুধবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খাগড়াছড়ির ‘নিউজিল্যান্ড’

ঊষার আলো রিপোর্ট
এপ্রিল ৩০, ২০২৫ ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

দুই পাশে সবুজ ধানের খেত পেরিয়ে অদূরেই চোখ আটকে যায় সবুজ পাহাড়ে। ছবির মতো চোখজুড়ানো দৃশ্য। শেষ বিকালে পশ্চিমের আকাশে সোনার রবি হলুদ আভা ছড়ায় তেপান্তরে। অনবদ্য এক ল্যান্ডস্কেপ ধরা দেয় খাগড়াছড়ির ‘নিউজিল্যান্ডে’। নামের কারণেই এলাকাটি সবার কাছে পরিচিত। আর নামের কারণেই অনেকে কৌতূহলী হয়ে বেড়াতে আসেন এখানে। গ্রীষ্মের পাকা ধানের হাসিতে ‘নিউজিল্যান্ড’ আরও সুন্দর হয়ে উঠেছে।

প্রায় এক দশক পর সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডে নতুন করে সড়ক সংস্কার করেছে খাগড়াছড়ি পৌরসভা। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরের নিউজিল্যান্ড এলাকাটি পানখাইয়াপাড়া ও আপা পেরাছড়াকে যুক্ত করেছে। সড়কটি নির্মিত হওয়ার পর থেকে বেড়েছে দর্শনার্থীর সংখ্যা।

নিউজিল্যান্ড এলাকার নামকরণ কীভাবে হলো, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে স্থানীয়দের ধারণা, আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র থেকে পাখির চোখে দেখতে এলাকাটি অনেকটা নিউজিল্যান্ডসদৃশ হওয়ায় এমন নামকরণ হতে পারে। প্রতিদিন বিকাল হতেই এখানে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ে। অনেকে আবার প্রাতঃভ্রমণে আসেন।

এক বিকালে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে দেখা যায় প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম। বিভিন্ন বয়সি মানুষ শেষ বিকালে এখানে ভিড় করেন। সড়ক লাগোয়া ধানখেতে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন। স্থানীয় দর্শনার্থী কবিতা চাকমা বলেন, সড়কটি আগে ব্যবহারের উপযোগী ছিল না। তাই এখানে আসা হতো না। এখন সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এখান থেকে সবুজ পাহাড় উপভোগ করা যায়। তাছাড়া যানবাহনের সংখ্যা কম থাকায় নির্মল প্রকৃতি উপভোগ করা যায়। তবে সড়কজুড়ে ফুলের বৃক্ষ রোপণ করলে এটি আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

নিউজিল্যান্ডে প্রায় বেড়াতে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা চেলছি ত্রিপুরা। তিনি বলেন, শহরের মধ্যে সময় কাটানোর মতো জায়গা নেই। নতুন সড়ক নির্মিত হওয়ার পর থেকে সবাই নিউজিল্যান্ডে আসছে। আমি প্রায় আসি। এখানে বিভিন্ন মানুষ শরীরচর্চাও করে। একটি সড়ক পুরো এলাকার দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। বর্ষায় এখান থেকে মেঘও দেখা যায়। পর্যটন শহর খাগড়াছড়ির নতুন ভ্রমণ গন্তব্য হতে পারে নিউজিল্যান্ড।

বেসরকারি ভ্রমণ সংস্থা ‘ঝটিকা সফর’-এর প্রতিষ্ঠাতা জান্নাতুল ফেরদৌসি মানু বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিউজিল্যান্ড এলাকার ছবি দেখেছি। এখানে এসে দেখলাম এটি ছবির মতোই সুন্দর। আজ বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পর পুরো এলাকাটি আরও সবুজ হয়ে উঠেছে। সত্যিই মুগ্ধ করার মতো একটি জায়গা। খাগড়াছড়িতে যারা বেড়াতে আসবেন, তারা যেন অবশ্যই নিউজিল্যান্ডে বেড়াতে আসেন।

দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় পর সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ করে খাগড়াছড়ি পৌরসভা। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১৬শ মিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ৮ কোটি টাকা। খাগড়াছড়ি একটি পর্যটন শহর। এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা বেড়াতে আসেন। সুবিশাল ধানের খেত, এরপর আলুটিলা শহর। এখানকার ভিউ অসাধারণ। মানসিক প্রশান্তির জন্য বিকালে প্রচুর মানুষ আসেন। সকালে অনেকে প্রাতঃভ্রমণ করেন। সড়কটি নির্মিত হওয়ায় নাগরিকরা উপকৃত হচ্ছেন। সড়কের পাশে ফুটপাত নির্মাণের কাজ চলছে। এখানে স্ট্রিট লাইটও লাগানো হবে। সড়কের পাশে বিভিন্ন ফুলের গাছও লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

ঊষার আলো-এসএ