পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : পাইকগাছায় বসবাসরত নালিশী সম্পত্তি থেকে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী-সন্তানকে বঞ্চিত করে বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করছে স্বামী সাহেব আলী গাজী। স্ত্রী-সন্তানকে উচ্ছেদ করতে ইতোমধ্যে স্বামী সাহেব আলী দ্বিতীয় স্ত্রীকে দিয়ে উচ্ছেদ মামলা করা সহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী রহিমা ও তার সন্তানরা।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানাগেছে, পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড গোপালপুর গ্রামের মৃত গহর আলী গাজীর ছেলে সাহেব আলী গাজী ১৯৮৭ সালের দিকে বান্দিকাটী গ্রামের মোজাম আলী গাজীর মেয়ে রহিমা খাতুনকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিবাহ করেন। বিবাহের পর রহিমাকে পৃথক স্থানে বসতবাড়ী করে দেবে মর্মে তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ১৯৯৩ সালে শিববাটী মৌজায় সাহেব আলী নিজের নামে জমি ক্রয় করে। সেই থেকে অধ্যাবধি রহিমা ও তার ৩ ছেলে-মেয়ে নিয়ে নানা কষ্টের মধ্য দিয়ে বসবাস করে আসছে। এরপর রহিমা ও তার সন্তানকে পিতার বাড়ীতে তাড়িয়ে দিলে রহিমা সাহেব আলীর বিরুদ্ধে পারিবারিক জজ আদালত পাইকগাছাতে ২০০১ সালে মামলা করে। মামলায় আপোস মিমাংসার মাধ্যমে শিববাটী মৌজার বাড়ীতে রহিমা ও তার সন্তানরা বসবাস করবে এবং ওই বাড়ীতে বসবাসের ক্ষেত্রে সাহেব আলী এবং তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানরা কখনো বাঁধা দিতে পারবেন না এবং তারা পুরাতন বাড়ীতে বসবাস করবেন মর্মে অঙ্গীকার করেন। এরপর ২০১৪ সালে সাহেব আলী শিববাটীর জমি লিখে দিবে মর্মে রহিমার নিকট থেকে তার পিতার বাড়ীর জমি বিক্রি করা ৫ লাখ টাকা নেয়। পরবর্তীতে রহিমার নামে সম্পত্তি দেওয়ার পরিবর্তে সাহেব আলী তার নামীয় সম্পত্তি ২০১৯ সালে প্রথম স্ত্রী হাচিনা খাতুন, মেয়ে আকলিমা খাতুনকে লিখে দেয়। এ ছাড়া ২ কাঠা জমি অনত্র বিক্রি করে দেয়। এরপর প্রথম স্ত্রী হাচিনা খাতুন জমি থেকে রহিমা ও তার সন্তানদের উচ্ছেদ করতে সিনিয়র সহকারী জজ আদালত পাইকগাছায় রহিমা, ছেলে তুহিন গাজী ও সামিনুর গাজীকে বিবাদী করে উচ্ছেদ মামলা করে। বর্তমানে সাহেব আলী, প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও তার সন্তানরা রহিমা ও তার সন্তানদের উচ্ছেদ করতে নানা ধরণের ষড়যন্ত্র করছে। গৃহবধু রোজিনা বেগম জানান, শশুর সাহেব আলী সহ তারা সবাই দা-কুড়াল নিয়ে আমাদের প্রায় মারতে আসে। রহিমা খাতুন জানান, জমি কেনার পর থেকে আমি ও আমার সন্তানরা বসতবাড়ী নির্মাণ করে নালিশী সম্পত্তিতে বসবাস করে আসছি। উক্ত সম্পত্তি আমাদের নামে লিখে দিবে মর্মে স্বামী সাহেব আলী ৫ লাখ টাকা নিয়েছে। টাকা নেওয়ার পরও সম্পত্তি লিখে না দিয়ে আমাদের সাথে প্রতারনা করেছে। আমার দুই ছেলে ভ্যান চালিয়ে কোন রকমে সংসার চালাচ্ছে। আমাদের আর কোন জায়গা জমিও নাই। বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদ করা হলে সন্তানদের নিয়ে পথে বসতে হবে। আমি যাতে সন্তানদের নিয়ে বসতবাড়ীতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারি এ জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করছি।