UsharAlo logo
রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরে কাঁঠালের ফলন বিপর্যয়

koushikkln
জুন ১২, ২০২১ ৩:০০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ মেহেদী হাসান, মণিরামপুর: যশোরের মণিরামপুরে এবার কাঁঠালের ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। চলতি মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় এবং অধিক তাপমাত্রায় গাছে কাঁঠাল ধরার পরপরই ছোট অবস্থায় ঝরে পড়েছে। এছাড়া অধিক খরায় কাঁটালের আকৃতি পরিবর্তন হয়ে আকারে ছোট হয়ে গেছে।
মণিরামপুর উপজেলার সব এলাকাতে বিক্ষিপ্তভাবে কাঁঠাল গাছ চোখে পড়ে। বাণিজ্যিকভাবে চাষ না হলেও সাধারণত প্রতিটি বাড়ির বসত ভিটায়, রাস্তার ধারে, পুকুর পাড়ে বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় দুই পাঁচটি করে কাঁঠাল গাছ রয়েছে। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হয়। এবার খরায় ফলন কম হওয়ায় ভ্যান বা পিকআপ ভর্তি কাঁঠাল নিয়ে ব্যাপারিদের ছুটতে দেখা যাচ্ছে না। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের দেওয়া তথ্যমতে মণিরামপুরে বিক্ষিপ্তভাবে ৭৫ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষ হয়। যার মোট উৎপাদন এবার সাত হাজার ৬০০ মেট্রিকটন। যা গত বছরের প্রায় অর্ধেক। উপজেলার মাহমুদকাটি গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বাড়িতে ৪-৫ টা কাঁঠাল গাছ আছে। প্রতিবছর নিজেরা খেয়েও বেশ টাকার কাঠাঁল বিক্রি করি। এবার খরা হওয়ায় কাঁটাল ধরার মুহূর্তে ঝরে গেছে। বেশি কাঁঠাল নেই। তাছাড়া দামও এবার কম। বাড়িতে ব্যাপারি এসে ১৪টা বড় কাঁঠালের দাম ৪০০ টাকা বলেছে। আমি দিইনি। একই গ্রামের বৃদ্ধ আলী আকবর বলেন, খরায় কাঁঠাল ঝরে গেছে। অন্যবছর হাটে অনেককে পাকা কাঁঠাল আনতে দেখেছি। এবার তেমনটি চোখে পড়েনি। বাগডোব গ্রামের জাহিদ হাসান বলেন, বাড়িতে ১৫-২০ টা কাঁঠাল গাছ আছে। খরার কারণে এবার কাঁঠাল ধরেছে কম। আকারেও বেশ ছোট। অধিক পুষ্টিগুণে ভরপুর কাঁঠাল প্রায় সব মানুষের কাছে প্রিয় একটি রসালো ফল। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানবদেহের জন্য বিশেষ উপকারী। যিনি একেবারেই কাঁঠাল খেতে পছন্দ করেন না তিনিও মৌসুম এলে বছরের ফল হিসেবে দুই এক কোষ কাঁঠাল খেয়ে থাকেন। অনেকে কাঁটাল কাচা রান্না করে খেতে ভালবাসেন।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, বাণিজ্যিকভাবে মণিরামপুরের কোথাও কাঁঠালের চাষ হয় না। পরিবারের চাহিদা মেটাতে এখানে প্রায় প্রতি বাড়ির আশপাশে বা পুকুর পাড়ে দুই-চারটা কাঁঠাল গাছ লাগানো হয়েছে। এবার চৈত্র বৈশাখের খরায় কাঁঠাল ধরার প্রথমদিকে কচি অবস্থায় ঝরে পড়েছে। পানির অভাবে কাঁঠালের আকৃতিও পরিবর্তন হয়েছে। তাছাড়া অন্য ফলের মত কাঁঠালের যতœ নেননা কেউ। গাছ লাগিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন। ফলন বিপর্যয় হলে অনেকে আমাদের কাছে পরামর্শ নিতে আসেন।
মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, অধিক পুষ্টিগুণ কাঁঠালে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি, বি-১, বি-২,পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা রকমের পুষ্টি ও খনিজ উপাদান পাওয়া যায়। এই সকল উপাদান আমাদের শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি ভিটামিনের চাহিদাও পূরণ করে কাঁঠাল। এটি হজমিশক্তি বাড়াতেও কাজ করে। তিনি বলেন, প্রতিবছর মণিরামপুরে প্রচুর কাঁঠাল উৎপাদন হয়। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হয়ে থাকে। তবে, খরার কারণে এবার এই অঞ্চলে কাঁঠালের ফলন তুলনামূলক কম হয়েছে। কাঁঠালের ফলন ধরে রাখতে প্রয়োজনে আমরা কৃষকদের যে কোন পরামর্শ দিয়ে থাকি।