UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক দিনে ৪ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে ৫ সহিংসতায় নারী-শিশু ও প্রার্থীসহ ৭০ জন আহত

usharalodesk
মার্চ ২০, ২০২১ ৪:৪৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাগেরহাটে ইউপি নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা
আরিফুর রহমান, বাগেরহাট : দলীয় প্রতিকে আসন্ন ইউপি নির্বাচন ঘিরে বাগেরহাটে নির্বাচনী সহিংসতা শুরু হয়েছে। মনোনয়ন দাখিলের পর ২ দিনে বাগেরহাটের চিতলমারি, শরণখোলা জেলা সদর ও মোড়েলগঞ্জে এ সহিংসতা প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। সহিংসতাকারিরা সকলেই বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হওয়ায় এখানের প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সাহস পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রর্ত্যক্ষদর্শীরা ও অভিযোগ সূত্রগুলি জানায়, জেলার চিতলমারী উপজেলা প্রশাসন ভবনে শুক্রবার (১৯ মার্চ) বিকেলে যাচাই-বাছাই চলাকালে উপজেলার কলাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদশা মিয়া গ্রুপ ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও ওই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলমগীর সিদ্দিকী গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলমগীর সিদ্দিকীসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। উপস্থিত পুলিশের সম্মুখে দফায় দফায় হাতুরি ও রাম দা নিয়ে এ ঘটনা পরে খুলনা থেকে র‌্যাব সদস্যরা এসে নিয়ন্ত্রন করে। একই দিনে হিজলা ইউনিয়নের প্রতিদ্বন্ধি চেয়ারম্যান প্রার্থীর লোকেদের হামলায় আহত হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী আজমীর হোসেন ও তার এক সহযোগী। একই দিন দুপুরে বাগেরহাটের শরণখোলায় ইউপি সদস্য প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে পৃথক দুটি সংঘর্ষে নারীসহ কমপক্ষে ২০জন আহত হয়েছেন। এখানে সাউথখালী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেনের সভায় হামলা চালায় বর্তমান ইউপি সদস্য ডালিমের সমর্থকরা। এখানে ৪ নারীসহ ২২ জন কমবেশী আহত হন। অপরদিকে একই ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী আল-আমিনের মিছিল থেকে বর্তমান ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম হালিমের সমর্থকদের উপর ইট-পাটকেল ছোড়ে। এ সময় উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে উভয় পক্ষের ৭ নারীসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের শরনখোলায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রন ও পরবর্ত্তি সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান শরণখোলা থানার ওসি সাইদুর রহমান। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নে দুইজন মেম্বর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নারীসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। আহতদের ওই রাতেই বাগেরহাট সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্ত্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। গুলি বর্ষনকারি সন্দেহে ডেমা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তরফদার মকবুল হোসেনসহ ৪ জন আটক করা হয়। ডেমা ইউনিয়নের ৭ ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত বর্তমান ইউপি সদস্য সজীব তরফদার ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেম্বর প্রার্থী ওয়াহিদ মোস্তফা বাপ্পি গ্রুপ এলাকার আধিপত্য নিয়ে এ সংঘর্ষে লিপ্ত হয় বলে বাগেরহাট সদর মডেল থানাও ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম জানান। অপরদিকে, জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পুটিখালি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক শেখের কর্মী সমর্থকরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনয়ন প্রত্যাশি মাওঃ আব্দুর কাদের সমর্থকদের উপর অত্যাচার –নির্যাতন করছে বলে শনিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসকøাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। পুটিখালি গ্রামের বাদশা মল্লিকের ছেলে মাসুদ রানা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, দলীয় প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাকের সমর্থক বিএনপি যুবদলের আলি আজিম বাবুল, সরোয়ার হাওলাদার, সজল, সোহেল, মুকুলমৃধা ও সজীব হাওলাদারসহ ২৫/৩০ জন মটরসাইকেল যোগে এলাকায় মহড়া দিচ্ছে এবং সভাপতির কর্মী-সমর্থকদের এলাকা ছেড়ে অন্যত্র যেতে বাধ্য করছে। ১৪ মার্চের পর থেকে প্রায় অর্ধশত মানুষ এলাকা ছেড়ে ভয়ে চলে গেছে। বর্তমানে ইউনিয়নবাসি চরম আতংক গ্রস্থ হয়ে পড়েছে। নির্বাচনের বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর শাফিন মাহমুদ বলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা ৪ জনকে আটক করেছি। চিতলমারী উপজেলা চত্বরে পুলিশ মোতায়েণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শরণখোলা সাউথখালিতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শরণখোলা ও চিতলমারীতে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ দেয়নি কেউ। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পরবর্তীতে সহিংসতা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য ১১ এপ্রিল বাগেরহাটের ৯ উপজেলায় ৭৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭০টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

(ঊষার আলো-এমএনএস)