ঊষার আলো প্রতিবেদক: নগরীর মহেশ্বরপাশা খাদ্য গুদাম সিএসডিতে ব্যবস্থাপক মকলেচ আল আমিন বদলি হওয়া সত্বেও মতা হস্তান্তর না করে খাদ্যগুদামে কর্মরত থাকায় খাদ্যগুদামের শ্রমিকদের মধ্যে ফের উত্তেজনা বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা দফায় দফায় মিছিল ও গেট সভা করেছে। তাদের দাবি মকলেচ আল আমিনকে ২৮ মার্চ খাদ্য অধিদপ্তর থেকে বদলির নির্দেশ দেয়া হলেও তিনি শুক্রবার (০২ এপ্রিল) পর্যন্ত এখানে কর্মরত আছেন। এই দুর্নীতিবাজ এই কর্মকর্তা এখানে থেকে বদলি না হলে তারা পুনরায় কর্মবিরতি পালন করবেন বলে ঘোষণা দেন। গত ২৯ মার্চ শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপির সাথে বিষয়টি নিয়ে খাদ্য গুদাম শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও ট্রাক শ্রমিক নেতাদের বৈঠক হয়। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নিকট তারা ম্যানেজারকে বদলী করে নেয়ার দাবি জানান।
মহেশ্বরপাশা খাদ্যগুদাম সিআইডির শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মিজানুর রহমান ফিরোজ বলেন, এ ম্যানেজারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বদলি করা না হলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে এই শ্রমিক নেতারা দায়ী হবেন না। তাঁরা বলেন যদি এই ব্যবস্থাপক মোঃ মকলেচ আল-আমিনকে বদলি না করা হলে আমরা পুনরায় সকল ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে কর্মবিরতি পালন করব।
উল্লেখ্য, এ ব্যবস্থাপককে বদলি করার আশ্বাস দিলে ২১ মার্চ মহেশ্বপাশা খাদ্যগুদামের শ্রমিকদের কর্মবিরতি বন্ধ করে কর্মে যোগদান করেছিলেন। ম্যানেজারকে বদলির বিষয় খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ বাবুল হোসেন জানান, এ বিষয়টি খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রজ্ঞাপনে তাকে বদলি করা হয়েছে। তিনি এখান থেকে মতা হস্তান্তর করেনি সে বিষয়টি আমি আমার উপরস্থ কর্মকর্তাদের জানিয়েছি তারা ব্যবস্থা নিবেন এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে পারিনা। গত ১৮ মার্চ খাদ্য অধিদপ্তর প্রশাসন বিভাগ থেকে অতিরিক্ত পরিচালক প্রশাসন সুরাইয়া খাতুন স্বারিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নগরীর দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা খাদ্যগুদামের ব্যবস্থাপক আল-আমিনকে বদলি করে জয়পুরহাটের তেলাল উপজেলা দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মকলেচ আল-আমিনের স্থলা ভিত্তিক হয়েছেন খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ বজলুর রহমান গাজীকে। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ্য, ২৮ মার্চ-২০২১ তারিখের মধ্যে স্ব স্ব কর্মস্থলে সকলকে যোগদান করতে হবে। তা না হলে ২৯ মার্চ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কর্মবিমুক্ত বলে গন্য হবে। বাংলাদেশ খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে এ আদেশ জারি করা হয়। মহেশ^রপাশা খাদ্য গুদামের একাধিক শ্রমিক নেতা বলেন, মহেশ^রপাশা খাদ্য গুদামের ব্যবস্থাপক মকলেচ আল আমিনের খুটির জোর কোথায়। খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে উপেক্ষা করে বহাল তবিওতে পুবের্র কর্মস্থল মহেশ^রপাশা খাদ্য গুদামে অফিস করছেন। মকলেচ আল-আমিনের স্থলা ভিত্তিক হয়েছেন খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ বজলুর রহমান গাজীকে আজ ৬ দিন অতিবাহিত হলে ও তাহার দায়িত্ব হস্তান্তর করছেন না। ব্যবস্থাপক কে প্রত্যাহার করে গত ১৮ মার্চ খাদ্য অধিদপ্তর প্রশাসন বিভাগ থেকে অতিরিক্ত পরিচালক প্রশাসন সুরাইয়া খাতুন স্বারিত প্রজ্ঞাপন আসার ফলে শ্রমিকদের মধ্যে যে অসন্তোষ পরিস্থিতি ও কর্মবিরতি চলছিল তার অবসান হয়েছিল। শ্রমিক নেতারা বলেন, মকলেচ আল আমিন প্রায় তিন বছর যাবৎ অনিয়ম এবং দুর্নীতি করে আসছিল।
উল্লেখ , গত ১৪ মার্চ নদীর ঘাটে বাজ থেকে গম খালাসকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যেই দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। গত ১৫ মার্চ থেকে শ্রমিকরা কর্মবিরতির ডাক দেয়। শ্রমিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনা তদন্তে গত ১৬ মার্চ খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ বাবুল হোসেন তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেন। শনিবার (২৭মার্চ )তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বাবুল হোসেন এর নিকট জমা দেন।