ঊষার আলো রিপোর্ট: বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন ছাড়াই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নতুন একটি বিভাগ খুলে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির আবেদনের পর মেধাতালিকায় থাকা ৩০ জন শিক্ষার্থীকে ‘গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা’ নামক ওই বিভাগে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ফলে বিভিন্ন মাধ্যমে অনুমোদন না থাকার বিষয়টি জানার পর ভর্তি নিয়ে দোটানায় পড়েছেন ভর্তীচ্ছুরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবছর ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে ‘অনুমোদন সাপেক্ষে’ উল্লেখ করে বিভাগটির নাম যুক্ত করা হয়। পরে মেধা তালিকাতেও ওই বিভাগে আসন বরাদ্দ দেয় কর্তৃপক্ষ। গত ৪ ও ৫ জানুয়ারি প্রথম মেধা তালিকার সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে ওই বিভাগে মাত্র একজন ভর্তীচ্ছু সাক্ষাৎকার দেন বলে জানা গেছে। ওই বিভাগে আসন বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষার্থীদেরকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ভর্তির বিষয় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
ইউনিট সমন্বয়কারী প্রফেসর ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, ‘উপাচার্য স্যারের নির্দেশমতে আমরা ভর্তি কার্যক্রম শুরু করেছি। অনুমোদন না পেলে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদে অন্য বিভাগে বণ্টন করে দেওয়া হবে।’
বিভাগটির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম ইউজিসি থেকে মৌখিক অনুমোদনের দাবি করে বলেন, ‘ইউজিসি থেকে মৌখিকভাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শিগগির লিখিত অনুমোদন হবে বলে আমাকে জানানো হয়েছে।’তবে ইউজিসি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফেরদৌস জামান তুহিন বলেন, ‘ইউজিসি থেকে মৌখিক অনুমোদন দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। অনুমোদন ছাড়া কোনো বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রশ্নই আসে না।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৭ ডিসেম্বর ইউজিসি’র একটি প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো পরিদর্শনে আসেন। এ সময় নতুন বিভাগের জন্য ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ঊর্ধমুখী সম্প্রসারণ চলমান থাকা ভবনের একাধিক কক্ষ দেখানো হয়। বিভাগটি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের হওয়ায় মীর মশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনে তাদের জন্য কক্ষ বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও ওই ভবনের সম্প্রসারণ শেষ হতে আরো সময়ের প্রয়োজন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া আইন অনুষদভূক্ত ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের নিজেদের কোনো শ্রেণিকক্ষ না থাকাই মীর মশাররফ হোসেন ভবনের স্থানটি তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে দুই বিভাগের কক্ষ বরাদ্দ নিয়ে জটিলতার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, সম্প্রসারণ শেষ হলে ব্যবসায় প্রশাসন ভবনের উপরের অংশ ইতোমধ্যেই ওই অনুষদের নিজস্ব শ্রেণিকক্ষহীন দুটি বিভাগকে বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানান বিভাগদুটির শিক্ষকরা।
ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন বলেন, ‘আমাদের অনুষদের বিভাগগুলোরই এখন স্থান সংকুলান হচ্ছে না। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেহেতু সর্বোচ্চ অথরিটি তারা চাইলে সাময়িকভাবে একটি কক্ষ নিতে পারে। তবে ব্যবসায় প্রশাসন ভবনে অন্য অনুষদের বিভাগ স্থায়ী হতে পারে না।’ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বিভাগ খোলার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের থেকে বেশি আগ্রহী। অনুমতির চিঠি পাওয়ার আগে কোনো ভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করা উচিত নয়।’