মোঃ মেহেদী হাসান, মণিরামপুর : ছোটবেলা থেকে অধম্য মেধাবী আব্দুর রহিম। ২০১৮ সালে মণিরামপুরের নেংগুড়াহাট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন তিনি। এরপর ভর্তি হন ঢাকার পিলখানা বীরশ্রেষ্ঠ নূরমোহম্মদ পাবলিক কলেজে। বিজ্ঞান বিভাগে ১৫০ জনের মধ্যে প্রথম হওয়ায় বিনা খরচায় সেখানে পড়ার সুযোগ পান। ২০২০ সালে করোনাকালীন সরকারের অটোপাশের সিদ্ধান্তে এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ পান তিনি। এইচএসসির ফলাফল পাওয়ার আগে ভর্তি হন মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য গড়ে ওঠা মেডিকো কোচিং সেন্টারে। অংশ নেন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায়। প্রথমবারেই বাজিমাত করেন তিনি। মেধাতালিকায় ৭২৪তম স্থান পেয়ে সুযোগ পান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়ার। মণিরামপুরের চালুয়াহাটি ইউপির গৌরিপুর গ্রামের রিকশা চালক আব্দুল হালিম বিশ্বাসের ছেলে আব্দুর রহিম। মা জেসমিন বেগম একজন গৃহিণী। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে বড় তিনি। আব্দুল হালিম বলেন, বিয়েরপর স্বপ্ন দেখতাম আল্লাহ আমাকে একটা ছেলে দিলে তাকে ডাক্তার বানাবো। আল্লাহ ছেলে দিলেন। সে মেডিকেলে চান্সও পেয়েছে। এখন পড়াব কি করে তা নিয়ে চিন্তা। মাঠান সম্পত্তি বলতে মাত্র দুই কাঠা জমি। আর দুই শতকের উপর ঘর। ঢাকায় রিকশা চালাই। মাঝেমধ্যে গ্রামে কামলা দিই। এখন ছেলের ভর্তি, বই কেনা; মেলা খরচ। পাব কোথায় তাই নিয়ে চিন্তা। তারপরও কষ্ট করে যোগাড় করতে হবে। গরিব মানুষ। আল্লাহ ভরসা। এদিকে আব্দুর রহিমের মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় খুশি এলাকাবাসী। তারা চান তিনি যেন ডাক্তার হয়ে এলাকার অসহায় দরিদ্র মানুষের সেবা করতে পারেন।
স্থানীয় রাজু আহম্মেদ নামে এক যুবক বলেন, রহিম আমাদের অহংকার। সে মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় আমরা সবাই খুশি। ওর বাপ তো গরিব। রিকশা চালায়। এত খরচ যোগাড় করবে কি করে।
আব্দুর রহিম বলেন, আমি চাই ডাক্তার হয়ে পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে। সাধ্যমত মানুষের সেবা করতে। আব্বু গরিব মানুষ। কষ্টতো করতে হবে। নেংগুড়াহাট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সামছুল হক বলেন, আব্দুর রহিম মেধাবি ও খুব পড়ুয়া ছেলে। ওর রোল ক্লাসে সবসময় চার পাঁচের মধ্যে থাকত। রহিমের ব্যাচে একাই সে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। ওর বাপের তো কিছু নেই; রিকসা চালায়। পড়ার খরচ দেবে কি করে সেটাই ভাবার বিষয়। আমি আব্দুর রহিমের সার্বিক কল্যাণ কামনা করি।
(ঊষার আলো-এমএনএস)