UsharAlo logo
শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণে আ.লীগ, বৃহত্তর ঐক্যের চেষ্টা বিএনপির

koushikkln
মে ৮, ২০২২ ১১:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে কাজ শুরু করেছে শাসক দল আওয়ামী লীগ। আর বিএনপি কাজ করছে বৃহত্তর ঐক্য গঠন নিয়ে। সূত্র: ডয়েচে ভেলে
এদিকে জাতীয় পার্টিও পিছিয়ে নেই। আপাতত কোনো জেটে যেতে চায় না দলটি বরং আগামী নির্বাচনে নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি দেখানোর কথাই ভাবছে।
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার (০৭ মে) বিকেলে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা বসে। বৈঠক শুরুর আগে দলটির তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে স্পষ্ট হওয়া গেছে যে, আওয়ামী লীগ আশা করছে তাদের অন্যতম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।

তবে বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে সেক্ষেত্রে কীভাবে নির্বাচন করা হবে তাও তারা এখনই ঠিক করে রাখতে চায়। আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা হলো কেউ নির্বাচনে না এলেও যথা সময়ে নির্বাচনের আয়োজন করা এবং কেউ নির্বাচন প্রতিহত করতে চাইলে তা মোকাবিলা করা।

আর সম্ভাব্য এসকল পরিস্থিতি সামলাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যে ইস্যুগুলো রয়েছে তা কীভাবে মোকাবিলা করা হবে সে কৌশলও তারা বিবেচনা করছে।
দুই বছরেরও বেশি সময় পর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে শনিবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আর এই বৈঠকে সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছেন সাংগঠনিক সম্পাদকরা। তারা বৈঠক শুরুর আগে শনিবার নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি বৈঠকও করেছেন।

দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর) সাখাওয়াত হোসেন শফিক জানান, ‘‘আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় কাউন্সিলের আগে আমরা তৃণমূল পর্যায়ে যে কমিটিগুলো এখনো মেয়াদোত্তীর্ণ সেগুলো নতুন করে গঠন করব। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে দলের প্রধান শেখ হাসিনা আমাদের নির্দেশনা দেবেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সারাদেশে কাজ করব। নির্বাচনে আমাদের কৌশল কী হবে তাও তিনি আমাদের বলে দেবেন।’’

আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম) আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের মূল শক্তিই হলো তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তারাই নির্বাচনে, প্রচারে, আন্দোলনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। এবারও তাই হবে। আমরা বা তারা বলে কিছু নেই। সবাই মিলেই আওয়ামী লীগ।’’
নিজেদের দলীয় অবস্থান শক্তিশালী করার পাশভপাশি বিএনপি এবং জামায়াতকে নিয়ে আওয়ামী লীগের বৈঠকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। তিনি বলেন, ‘‘জামায়াতের নিবন্ধন না থাকলেও তারা তো বিএনপির সাথে আছে। আশা করি সবাই নির্বাচনে আসবে। কিন্তু কেউ যদি নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে তাহলে রাজনৈতকিভাবে প্রতিহত করা হবে।’’

সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল) আফজাল হোসেন জানান, ‘‘জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সব ইস্যুই আওয়ামী লীগ নজরে রাখছে। এগুলো নিয়ে কৌশল নির্ধারণও করা হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য যা করা দরকার তার সব প্রস্তুতিই আমরা নিচ্ছি।’’

র‌্যাব ও পুলিশের ছয় কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর আর যাতে নতুন করে কেউ কোনো নিষেধাজ্ঞার মুখে না পড়ে সেদিকেও সতর্ক হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আর এর জন্য তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রচার জোরদার করছে তারা। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য নিয়েও তারা বিভিন্ন মাধ্যমে কথা বলবে বলে জানা গেছে।

জাতীয় পার্টির সাথে মহাজোট নিয়ে এখনো ভাবছে না আওয়ামী লীগ। তবে নির্বাচন এগিয়ে এলে পরিস্থিতির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে বলে জানান এই নেতারা। তবে ১৪ দলীয় জোটকে আরো সক্রিয় করা হচ্ছে।

এদিকে বৃহত্তর জোট গঠনের ঘোষণা দিলেও এখন জোট নয় বরং বৃহত্তর ঐক্য করতে চায় বিএনপি। জাতীয় সরকার নির্বাচনের আগে না পরে এই ইস্যুতে ঐকমত্য না হওয়ায় বিএনপি বৃহত্তর জোটের চিন্তা থেকে সরে এসেছে।

দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘‘এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন- এই মিনিমাম ইস্যুতে আমরা একমত হয়ে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে ঐক্য করার কাজ করছি। জোট হবে কী হবে না তা নির্ভর করবে ঐক্য হওয়ার পর। আর নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হয়ে আন্দোলনে থাকা সব দলকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে।’’

জানা গেছে, এই বৃহত্তর ঐক্যে কোনো দল আলাদাভাবে বা ছোট ছোট দল জোট করেও থাকতে পারবে। সমন্বয়ের মাধ্যমে কর্মসূচি দিয়ে আলাদা আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করবে তারা। ঐক্যের গঠনের প্রক্রিয়া শেষ হলে বিএনপি বড় কোনো কর্মসূচি দেয়ার কথা ভাবছে।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘‘আমরা তো এমনিতেই চাপের মুখে আছি। আন্দোলন-সংগ্রাম করলে চাপ আসবেই। নির্বাচনের আগে যদি চাপ আরো বাড়ে তাহলে আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে তা মোকাবিলা করব। আমরা কোনোভাবেই এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব না। নির্বাচন হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।’’

জাতীয় পার্টি এখনই প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে। কোনো জোট থেকে নয় বরং এককভাবে নির্বাচন করতে চায় দলটি।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু জানান, ‘‘নির্বাচনের পর মহাজোটের আর কোনো অস্তিত্ব নাই। ওটা ছিলো একটি নির্বাচনী জোট। আবার এই জোট হবে কি না বা তারা কোন দিকে যাবে–আওয়ামী লীগ না বিএনপি– তা সময়ই বলে দেবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা ৩০০ আসনেই নির্বাচনে প্রার্থী দেয়ার কাজ শুরু করেছি। যেখানে আমাদের ভালো প্রার্থী নাই সেখানে আমরা যোগ্য লোকজন যারা আসতে চান তাদের নিচ্ছি।’’

সাংগঠনিক কার্যক্রমও জোরদার করেছে দলটি। বর্ধিত সভা করে দলটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আগামী জুন মাসের মধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে, এরপর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সভা করা হবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে। তারপর ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে তারা।