UsharAlo logo
শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হতে পারে: ফাইজার

usharalodesk
এপ্রিল ১৬, ২০২১ ১০:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন মার্কিন ফার্মা জায়ান্ট ফাইজারের ভাইরোলজিস্টরা। করোনার চরিত্র বদলের ফলে জিনের গঠন বিন্যাসের এত পরিবর্তন হয়েছে যে এই ভাইরাল স্ট্রেন থেকে রক্ষা পেতে ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ প্রয়োজন হতে পারে। ফাইজার সিইও অ্যালবার্ট বোরলা বলেন, ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ হবে ‘বুস্টার’, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
ফাইজারের দাবি, প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর ছয় মাস থেকে এক বছর পরে এই তৃতীয় ডোজ নেয়াটা খুবই দরকার। এই ডোজেই শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি আরও বাড়বে।
করোনাভাইরাস শুরু তে যেমনটা ছিল এখন তার রূপ অনেকটাই পরিবর্তিত। বিশ্বজুড়েই ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেনে মিউটেশন বা জিনের গঠন বিন্যাস খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। একবারে ২০০ বার জিনের গঠন বদলাতেও দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। স্পাইক প্রোটিনে অ্যামাইনো অ্যাসিডের কোডও বদলে যাচ্ছে। তাই ভাইরাল স্ট্রেন দিনে দিনে আরও ছোঁয়াচে, অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে।
ফাইজারের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স করে বা জিনের বিন্যাস সাজিয়ে যেমনটা দেখে ভ্যাকসিনের ফর্মুলা তৈরি হয়েছিল, সেই জিনের বিন্যাসই এখন বদলে গেছে। যদিও ভ্যাকসিনে কাজ হবে ঠিকই, কিন্তু সারা বছর সংক্রামক ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে শরীরের ইমিউনিটি সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। এর জন্যই দরকার এই তৃতীয় ডোজ।
সাধারণত, ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ শরীরে ঢুকে ইমিউন কোষগুলোকে (বি-কোষ ও টি-কোষ) সক্রিয় করার চেষ্টা করে। দেহকোষে ভাইরাস প্রতিরোধী সুরক্ষা বলয় তৈরি করার জন্য ইমিউন কোষগুলোকে অ্যাকটিভ করা শুরু করে। দ্বিতীয় ডোজে এই কাজটাই সম্পূর্ণ হয়। বি-কোষ সক্রিয় হয়ে প্লাজমায় অ্যান্টিবডি তৈরি করে। অন্যদিকে, টি-কোষ বা টি-লিম্ফোসাইট কোষ সক্রিয় সংক্রামক কোষগুলোকে নষ্ট করতে শুরু করে। দুই ডোজের পরে যে অ্যান্টিবডি শরীরে তৈরি হয় তা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেয়।
কিন্তু এই অ্যান্টিবডি কতদিন শরীরে টিকে থাকছে সেটাই হলো আসল প্রশ্ন। বিজ্ঞানীরা কখনও বলছেন, করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তিন মাসের বেশি থাকছে না, হুট করে কমে যাচ্ছে। আবার কখনও দাবি করা হচ্ছে, অ্যান্টিবডি কম করেও সাত মাস টিকে থাকছে।
ফাইজারের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, অ্যান্টিবডির স্থায়িত্বকাল যেহেতু কম তাই দুই ডোজে ভরসা না করে বুস্টার ডোজ দরকার। টিকা নেয়ার প্রায় এক বছর পরে যদি এই বুস্টার দেয়া হয়, তাহলে আবারও শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে, আরও কয়েকমাস ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কোভিড রেসপন্স টিমের প্রধান ডেভিড কেসলারও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে করোনার সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে তাতে তৃতীয় বুস্টার ডোজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে পারে প্রশাসন।

(ঊষার আলো-এমএনএস)