UsharAlo logo
বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দখিন-পশ্চিমে ঘুচবে বৈষম্য, ঘুরবে নতুন শিল্পায়নের চাকা

koushikkln
জুন ২৫, ২০২২ ৬:৫৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : ‘ঢাকাতো এখন বাড়ির কাছে, আর চিন্তা নাই। সকালে ঢাকা যাব, দুপুরে আসবো। এখন আর অংক করে রাজধানীতে যেতে হবে না।’ এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন তরুন ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম। শুধু নাজমুল ইসলামই নন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল অঞ্চলের দৃশ্যপট পাল্টে যাচ্ছে। আর্থ সামাজিক, ব্যবসা, বাণিজ্যে নতুন স্বপ্ন দেখছেন এখানকার বাসিন্দারা। যুগের পর যুগ বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চান তাঁরা। তাঁরা চান, নতুন নতুন শিল্পায়ন, অবারিত কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র।

মূলত পদ্মাসেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকা এখন দক্ষিণাঞ্চলবাসীর হাতের মুঠোয়। তাই স্বস্তিতে সাধারণ মানুষ। দেশের প্রধানতম নদীর একটি পদ্মা। রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাকে পৃথক করে রেখেছে প্রমত্তা পদ্মা নদী। রাজধানী ঢাকায় পৌঁছাতে হলে দেশের অন্যতম দুটি নৌপথ মাদারীপুর-মুন্সীগঞ্জ জেলার বাংলাবাজার-শিমুলিয় ফেরিঘাট এবং রাজবাড়ী-মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাট পার হতে হয়। এছাড়াও ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের মৈনটঘাট পার হয়েও রাজধানীতে পৌঁছানো যায়। ওই ঘাট পার হতে হলেও পদ্মানদীকেই অতিক্রম করতে হয়। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভালো না হওয়ায় দূরবর্তী জেলার যাত্রীরা ওই রুটটি ব্যবহার থেকে বিরত থাকে। অর্থাৎ দক্ষিণাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে একমাত্র পদ্মানদীই।

শনিবার (২৫ জুন) সকাল ১০টায় উদ্বোধন হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। ২৬ জুন সকাল থেকে সাধারণ যাত্রীরা পদ্মা সেতু ব্যবহার করতে পারবে। আর এই সেতুর মাধ্যমে রাজধানীর দুয়ারে পৌঁছে গেল দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলা। এই সেতুবন্ধনের মধ্য দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়ে গেল।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বাহালুল ইসলাম, পলাশ দাস বলেন, ঢাকায় যেতে এতদিন মানুষের যেখানে নানান হিসাব-নিকাশ করতে হতো, এখন কোনো বাধা থাকল না আর। দিনের ২৪ ঘণ্টার যেকোনো স্থান থেকে রাজধানীতে পৌঁছাতে পারবে এই অঞ্চলের মানুষ।

দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর ফলে এই অঞ্চলের মানুষের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী সহজেই ঢাকায় পৌঁছানো যাবে। আবার ঢাকা থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি গ্রামাঞ্চলে নিয়ে আসা যাবে। সেতুর ফলে সময়ও যেমন বাঁচবে, তেমনি খরচও কমে আসবে। এতে করে ব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে পদ্মাপাড়ের এই অঞ্চলে। তাতে করে বাড়বে জীবনযাত্রার মানও।

আবুল হাসান নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘এই পদ্মা নদী পার হতে গিয়ে পিনাক-৬ নামে লঞ্চ ডুবে প্রাণহানি হয়ে অসংখ্য মানুষের। স্বজনহারা হয় অসংখ্য পরিবার। অনেকের মরদেহ শনাক্ত করতে পারেনি স্বজনেরা। পদ্মানদী পার হতে গিয়ে স্পিড বোট ডুবে একসঙ্গে নারী-শিশুসহ ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এই নৌরুটে। কাল পদ্মাসেতু চালু হচ্ছে। এ নৌরুটে দুর্ঘটনার শিকার হতে হবে না যাত্রীদের। পদ্মা সেতু শুধু সেতু নয়, এটি আমাদের আবেগের বিষয়।’