আরিফুর রহমান, বাগেরহাট : বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ঘন্টা বাজানো হাতুড়ীর আঘাতে আলিফ(১০) নামের একজন শিশু শিক্ষার্থী মাথা ফেটে আহত হয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে চিতলমারী উপজেলার একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ওই শিক্ষার্থী উপজেলা সদরের উচ্ছাস কিন্ডার গার্টেনের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ও উপজেলার খড়মখালী গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (আগস্ট) দুপুরের দিকে শ্রেণিকক্ষে এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেলেই উপজেলা শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিলম্বে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী উচ্ছাস কিন্ডার গার্টেনের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্ররা ও আহত আলিফের সহপাঠিরা জানায়, কক্ষ সংকট হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষে তাঁদের ও পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক্লাস হয়। প্রতিদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবারও ক্লাস চলছিল। এ সময় পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র সজল বিশ^াসকে শিক্ষক অনিম রহমান স্কুলের ঘন্টা পেটানো হাতুড়ী দিয়ে আঘাতের ভয় দেখায়। অসাবধনাতার কারনে হাতুড়ীর ওই আঘাতটি পাশে থাকা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আলিফের মাথায় লেগে সে আহত হয়। পরে অন্য শিক্ষকরা তাঁকে পার্শবর্তী একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করেন। আলিফের মা লিমা বেগম ও পিতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের একমাত্র সন্তানের মাথায় আঘাত লেগেছে। আমরা আমাদের সন্তানের উন্নত চিকিৎসার দাবি জানাই। ওই ক্লিনিকের পরিচালক চিকিৎসক শেখ ফারুক আহম্মেদ বলেন হাতুড়ীর আঘাতে ওই ছাত্রের মাথা কেটে যায়। তাঁর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
উচ্ছাস কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক ও পিরোজপুর নাজিরপুর উপজেলার বরইবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক এবং অনিম রহমান উচ্ছাসের পিতা অসিকুর রহমান মিলন জানান, ঘটনা তেমন কিছু নয়। অন্য ছাত্রকে ভয় দেখাতে গিয়ে ওর মাথায় আঘাত লেগেছে। আমার স্কুলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের ইএমআইএস নাম্বার রয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় প্রাইভেট স্কুলে খুলে অনিম রহমানরা ব্যবসা করেন। শিশু শিক্ষার্থীর মাথা ফাটলেও কিন্ডারগার্টেনে চতুর্থ শ্রেনী পঞ্চম শ্রেনির শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করানোর বিষয়টি তদন্ত হওয়া উচিত।
চিতলমারী সহকারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার দেবনাথ ও এস এম আলী আকবর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ‘আঘাতে ওই ছাত্র আহত হয়েছে। আমরা তাঁর খোঁজ নিয়েছি।’ আর এ ধরণের স্কুল করতে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের বিভাগীয় উপ-পরিচালকের স্থাপনা চালু ও পাঠদানের অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন ও রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করতে হয়। ওই স্কুলের এগুলো আছে কিনা আমাদের জানা নেই বলে জানান চিতলমারী উপজেলা প্রথামিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম।