UsharAlo logo
শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চুয়াডাঙ্গায় করোনা আতঙ্কে হাসপাতালে রোগী সংকট

usharalodesk
এপ্রিল ১৯, ২০২১ ১০:৪৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : করোনা আতঙ্ক ও লকডাউনের প্রভাব পড়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রোগী ভর্তির ক্ষেত্রেও। ব্যাপক হারে কমে গিয়েছে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। চলতি মাসের ১৪ তারিখ থেকে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে এ অবস্থা বিরাজ করছে। চলমান লকডাউনের ৫ দিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে মাত্র ২৫৪ জন রোগী। আর বর্হি বিভাগে এই পাঁচ দিনে চিকিৎসা নিয়েছে ৬২৬ জন রোগী। আগে যেখানে প্রতিদিন লম্বা লাইনে দাড়িয়ে থেকে দেড় থেকে দুই হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন এখন সেই চিত্র পাল্টে রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে চার ভাগের এক ভাগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, যানবাহন বন্ধসহ করোনা ভাইরাজের উর্ধ্বগতীর কারনে এ অবস্থা হয়েছে।
সরেজমিনে চলতি লকডাউনের পাঁচদিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, জরুরি বিভাগসহ বর্হি বিভাগ ঘুরে এ দৃশ্যই ভেঁসে উঠেছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সদর হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন নূর-জাহান বেগম বলেন, ‘১৬ তারিখ দুপুরে পাখিভ্যানে করে জরুরি প্রয়জনে বড় মেয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে একটি ইজিবাইকের ধাক্কায় মাজার হার ভেঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। বেড পেতে কোন ঝামেলা হয়নি। হাসপাতালে কোন ভিড় নেই। অনেকগুলো বেড এখনও ফাকা পড়ে আছে। তিনি আরও বলেন, কয়েকমাস আগে মেয়েকে হাসপাতালের নিচ তলায় ভর্তি করেছিলাম। তিনদিন ফ্লোরে থোকার পরেও বেড পাইনি সে সময়।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাতালে মেডিসন ওয়ার্ডের আয়া সুফিয়া বেগম বলেন, ‘সদর হাসপাতালে সবথেকে বেশি রোগী ভর্তি থাকে মেডিসিন ওয়ার্ডে। রোগীরা দুইদিনের বেশি সময় ওয়ার্ডের ফ্লোরে থেকেও বেড পাই না। ওয়ার্ডের বারান্দাতেও রোগীদের ঠায় পেতে বেগ পোহাতে হয়েছে দিনের পর দিন। লকডাউনের ফলে সেই মেডিসিন ওয়ার্ডেও অনেক বেড ফাঁকা পড়ে আছে। রোগী কম থাকাই সাধারণ দর্শনার্থীদের সংখ্যাও নেই বল্লেই চলে। ওয়ার্ড পরিচ্ছন্ন রাখতে ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সময় কম লাগছে। আগের থেকে ওয়ার্ডের অবস্থাও উন্নত হয়েছে। দুগন্ধ একে বারেই নেই।
সিনিয়ন স্টাফ নার্স রেখা রানী সাহা বলেন, ‘কয়েকদিন পূর্বেও রোগীর উপস্থিতি এতটাই বেশি ছিলো যে রোগীদেরকে চিকিৎসা দিতে হিমশিত খেতে হয়েছে। কয়েকদিন থাকার পরও বিছানা না পেয়ে রোগীর স্বজনেরা চিল্লা-চিল্লি করেছে। বর্তমানে রোগীর চাপ কম থাকাই ঝামেলা ছাড়াই প্রতিটা রোগীকে ভালো মতো চিকিৎসা সেবা দিতে পারছি।
জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাজিদ হাসান বলেন, ‘লকডাউনের কারণে হাসপাতালে আগের থেকে রোগীর সংখ্যা অনেক কম । এর মধ্যেও যারা আসছেন তাঁরা গুরুত্বর অবস্থাতেই আসছেন। ঠান্ডা জ্বর, উচ্চ রক্তচাপ , মাথা ব্যাথা ও সড়ক দুর্ঘটনাই আহতরা ছাড়া সাধারণ রোগীরা হাসপাতালে আসছেন না। রোগীর উপস্থিতি কম থাকাই রোগীর স্বজনদের উপস্থিতিও অনেক কম। ফলে চারিদিকে ফাঁকা লাগছে। এ অবস্থায় অল্প সংখ্যক রোগীদের চিকিৎসা দিতেও অনেক সুবিধা হচ্ছে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এ এস এম ফাতেহ্ আকরাম বলেন, ‘ করোনা আতঙ্ক ও লকডাউনের প্রভাব পড়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তিসহ সাধারণ রোগীদের ক্ষেত্রেও। ব্যাপক হারে কমে গিয়েছে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। করোনার উর্ধ্বগতির ফলে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনের চারদিনে হাসপাতালের রোগীর উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে আগের থেকে অর্ধেকেরও বেশি কমেছে। শুধু মাত্র অন্ত বিভাগেই নয় হাসপাতালের বর্হি বিভাগেও রোগীর সংখ্যা কমেছে। যে কারণে করোনা মহামারিতে সংক্রমণ রোধে তাঁদের স্বাস্থবিধি ও নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাও সহজ হচ্ছে।

(ঊষার আলো-এমএনএস)