UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যশোরে আগুনে কোটি টাকার ক্ষতি

usharalodesk
এপ্রিল ২২, ২০২১ ১০:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : যশোর শহরের টাউন হল ময়দান সংলগ্ন জেলা পরিষদ হকার্স সুপার মার্কেটে আগুনে এক কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। পূঁজি হারিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক তারিক হাসান বিপুল জানিয়েছেন, মার্কেটের পূর্ব পাশের পেছনের দিক থেকে আগুন লাগে বলে জানতে পেরেছি। আগুনে ব্যবসায়ী আবু তাহের পাঠান, কাইয়ুম মুন্সি, সাব্বির হোসেন, পলাশ মাহমুদ, আশিকুর রহমান মিনু মেম্বার, কালু মিয়া, মিরাজুল ইসলাম, আব্দুল গফুর, রিপন হোসেনের দুইটি দোকান, চান মিয়া, আমির হোসেন, প্রবীর কুমার, আকবর আলী এবং জাকির হোসেনের দোকানঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তারা বলেছেন, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দোকানিরা নতুন কাপড় তুলেছিলেন। এছাড়া পুরনো কাপড়ের বেল ছিলো। সবমিলিয়ে আগুনে কোটি টাকার বেশি মালামাল পুড়ে গেছে ।
যশোর কোতয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, আগুনের সংবাদ শুনে কোতয়ালি থানার একাধিক টিম ঘটনান্থলে যায় এবং ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি পুলিশের একাধিক টিম আগুন নিয়ন্ত্রণে করে।
ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানতে পেরেছেন, তারা সর্বস্ব দিয়ে বিনিয়োগ করেছিলেন ওই ব্যবসায়। করোনাকালীন সময়ে তারা মালামাল বিক্রি করতে পারেননি। ঈদের আগে বিক্রি হবে বলে আশা করেছিলেন। কারন প্রত্যেক কাপড় ব্যবসায়ী ব্যাংক, অর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে থাকে ঈদের আগে। বিক্রির পর লভ্যংশ দিয়ে ঋণ পরিশোধ হয়। কিন্তু আগুনে সব শেষ হয়ে গেলো।
চয়ন সিট বিতান নামে একটি দোকানের মালিক আশিকুর রহমান মিনু জানিয়েছেন, ‘তিনি সদর উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামে বসবাস করেন। জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটে তার একটি কাপড়ের দোকান আছে। ঈদে আগে কিছু নতুন কাপড় উঠানো হয়েছিলো। নতুন কাপড় উঠানোর জন্য আর্চ বাংলাদেশ, আরআরএফ এবং সমাধান নামক তিনটি এনজিও থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। আগুনে তাকে পথে বসিয়ে দিয়েছে।
আরেক ব্যবসায়ী পলাশ মাহমুদ জানিয়েছেন, জাহাঙ্গীর হোসেন খোকন নামে এক ঘর মালিকের কাছ থেকে দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করতেন। সাড়ে তিন লাখ টাকার মালামাল ছিলো দোকানে। কিন্তু এক মুহুর্তের আগুনে সব শেষ হয়ে গেছে। রাত একটার সময় সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখতে পািই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
নিঝুম গার্মেন্টেসের মালিক আকবর আলী বলেছেন, ‘৭ লাখ টাকার কাপড় ছিলো দোকানে। ঈদের আগে নতুন কাপড় কেনা হয়েছিল। রুপালী ব্যাংক থেকে দেড় লাখ এবং এনজিও থেকে আরো এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। কিন্তু ঋণ পরিশোধের কোন উপায় আর এখন নেই।
আগুন লাগার সংবাদ পাওয়ার পরপরই জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন সিকদার, পৌরসভার মেয়ার হায়দার গণি খান পলাশ, কোতয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম, ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজি সুমন, যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাশ আজাদ লিটু ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং ক্ষতিগ্রস্থতের খোঁজ খবর নেন। এছাড়া বৃহস্পতিবার সকালে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর জহুরুল ইসলাম, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহমুদ হাসান বিপু, সাবেক নেতা ইউসুফ শাহীন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সভাপতি ইকবাল কবির জাহিদ, জেলা সিপিবির সভাপতি অ্যাড আবুল হোসেসহ রাজনৈতিক নেতারা ছুটে যান এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে কথা বলেন। এসময় ইকবাল কবির জাহিদ এবং আডভোকেট আবুল হোসেন, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সরকারি ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করার আহবান জানান। একই সাথে সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা পাইয়ে দেয়ার দাবি জানান। এদিকে, বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজি সুমন ক্ষতিগ্রস্থ প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে নগদ ৫ হাজার টাকা করে সহযোগিতা করেন। কারণ যেখানে মার্কেটটি অবস্থিত সেটা যশোর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে। তিনি ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
উল্লেখ্য, বুধবার (২১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে যশোর টাউন হল ময়দান সংলগ্ন জেলা পরিষদ হকার্স সুপার মার্কেটে আগুন লাগে। দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিপেন্সের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুনে ১৫টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

(ঊষার আলো-এমএনএস)