যশোর প্রতিনিধি
যশোরে যৌতুকের জন্য সদরকোটের জিআরও স্ত্রী এসআই শাহজাদীকে নির্যাতন করায় ঝিনাইদহের পিবিআই ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। বিভাগীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্য ও অসদাচরণে অপরাধে এডিশনাল ডিআইজি বেলাল উদ্দিন সাক্ষরিত এক স্মারকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসাথে তাকে রংপুর ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। শাহাজাদীও কামরুজ্জামান দম্পতির বিষয়টা নিয়ে যশোরে ব্যাপক আলোড়ন ও তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
খুলনার দিঘলিয়ার বাসিন্দা ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামানের সাথে ২০০০ সালে বাগেরহাট সদরের বাসিন্দা এসআই শাহজাদীর বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুটি ছেলে আছে তারা স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করে। এসআই শাহাজাদী যশোর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সদর কোর্টের জিআরও হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। চাকরি সূত্রে বর্তমানে তিনি যশোরের স্টেডিয়াম পাড়ায় বসবাস করেন। ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামান প্রায় যৌতুকের জন্য শাহজাদীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। যে কারণে তিনি কামরুজ্জামানের নামে যৌতুকের মামলা করেন। ছুটিতে বাড়ি আসার পর গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে কামরুজ্জামান মামলা তুলে নিতে এবং খুলনায় তার নামে থাকা একটি জমি লিখে দিতে চাপ দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কামরুজ্জামান তাকে নির্যাতন করে। বর্তমানে এসআই শাহজাদী যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ইন্সপেক্টার কামরুজ্জামান বলেন, সামরিক বরখাস্তের চিঠি তিনি এখনো হাতে পাননি। তবে বিভাগীয় ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ নিতেই পারেন। প্রায় ১২ বছর শাহাজাদী তার বেপরোয়া জীবন-যাপনের কারণে আমার সংসারের দুটো সন্তান মায়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত। সন্তানকে আমি মায়ের স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখছি। এমনকি আমার পরিবারের লোকজন তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। তাকে শুধরানোর চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু ফিরে আসেনি। তার ওপর নির্যাতনের কোন ঘটনা ঘটেনি। ঐদিন আমি কোথায় ছিলাম তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে।
এদিকে যশোর শহর জুড়ে পুলিশ দম্পত্তির এই ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ বেপরোয়াভাবে জীবন-যাপন করতেন এসআই শাহাজাদী। নিজের স্বামীকেও তিনি তোয়াক্কা করতেন না। মোটরবাইকে বেপরোয়া গতিতে শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন তিনি। এসআই শাহাজাদী ও ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামান দম্পতির মধ্যে এমন ঘটনায় শহরময় সমালোচনা ও আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে এস আই শাহাজাদীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার জন্য আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আইন সবার জন্য সমান। অন্যান্য বিষয়গুলো তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন যা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে সেটা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে সেটি মিথ্যে বানোয়াট।