ঊষার আলো রিপোর্ট :পাঠ্যবইয়ের ভুল-ত্রুটি ও দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে আলাদা দুটি কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রথমটি কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ কমিটি ও দ্বিতীয়টি তদন্ত কমিটি হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে। দুই কমিটিতে সাত সদস্য বিশিষ্ট করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ কমিটির মেয়াদ ৩০ কর্মদিবস ও তদন্ত কমিটির ২১ কর্মদিবস সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তারা তদন্ত কাজ শেষ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেবে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট মাধ্যমে জানা গেছে।শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, বিশেষজ্ঞ কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল হালিমকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্য বিশিষ্ট করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপপরিচালক মো. আজিজ উদ্দিনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। বাকি সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওয়াহেদুজ্জামান চাঁন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) লুৎফর রহমান, কারিগরি মাদ্রাসা বিভাগের উপসচিব, ইসলামি ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও মতিঝিল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল নাহার শাহীন।
জানা গেছে, এ কমিটি পাঠ্যবইয়ে ভুলক্রটি, বিতর্ক সব কিছুর পর্যালোচনা করবে। এ বিষয়ে একটি ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম তৈরি করা হবে। দেশ-বিদেশ থেকে যে কেউ ভুল-অসঙ্গতি তুলে পাঠাতে পারবেন। সেগুলো এ কমিটির সদস্যরা যাচাই করবেন। পাশপাাশি পাঠ্যবইগুলো নতুন করে রিভিউ করা হবে। যেসব ভুলক্রটি চিহ্নিত করা হবে সেগুলো সংশোধন করতে পরামর্শমূলক একটি প্রতিবেদন পরবর্তী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দেবে।
তদন্ত কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তারকে আহ্বায়ক করে উপ-সচিব মিজানুর রহমানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে যুগ্ম সচিব মোল্লা মিজানুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের উপ-সচিব, মাউশির পরিচালক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম খান, বিএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আব্দুল মান্নান মিয়াকে রাখা হয়েছে। এ কমিটির তালিকা প্রকাশ করে একটি বিজ্ঞপ্তি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা হবে। এরপর থেকে উভয় কমিটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, তদন্ত কমিটি মূলত পাঠ্যবইয়ে যেসব ভুলক্রটি ধরা পড়েছে, তা কিভাবে হয়েছে ও কারা এর সঙ্গে দায়ী রয়েছেন সেসব ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির জন্য সুপারিশ করবে। এ কমিটিকে ২১ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পাঠ্যবইয়ের ভুলক্রটি চিহ্নিত ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে আলাদা দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হবে। এরপর থেকে কমিটির সদস্যরা কাজ শুরু করবেন।
এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে ভুল-ভ্রান্তি, তথ্য বিকৃতি ও ধর্মীয় উস্কানি সংশোধনসহ জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে উচ্চপর্যায়ের দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। একটি কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সম্পৃক্ত থাকবেন বলে জানান তিনি। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে নতুন শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে ভুল-ভ্রান্তি সংশোধন সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।
ঊষার আলো-এসএ