UsharAlo logo
শনিবার, ২রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নিরাপত্তা ট্রায়াল রান শেষ ফায়ার সার্ভিসের

usharalodesk
অক্টোবর ৩, ২০২৩ ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট :  চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেলের নিরাপত্তাবিষয়ক ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক প্রস্তুতি) সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও পুলিশের কয়েক ঘণ্টার এ যৌথ ট্রায়াল রান অনুষ্ঠিত হয়। এতে টানেলের নিরাপত্তার দিকগুলো পরীক্ষা করা হয়েছে। বিশেষ করে কোনো গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়লে কিংবা অগ্নিকাণ্ডজনিত কোনো সমস্যার উদ্ভব হলে কিভাবে তা মোকাবিলা ও উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনা করা যায়, সেসব বিষয় খতিয়ে দেখা হয়েছে।

আগামী ২৮ অক্টোবর দেশের ইতিহাসে প্রথম এই টানেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। পরদিন থেকেই টানেলের ভেতর দিয়ে চলবে গাড়ি। এই টানেলের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে কর্ণফুলী নদীর অপর প্রান্তে সড়কপথে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে যুক্ত করা হয়েছে। এতে যোগাযোগব্যবস্থার যুগান্তকারী উন্নতির পাশাপাশি দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নদীর তলদেশে টানেলের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। এখন এটি উদ্বোধনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। যেহেতু টানেলে চলাচলের বিষয়টি একেবারেই নতুন, তাই এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা, গাড়ি চলাচলে কোনো ধরনের সমস্যা হয় কিনা তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন ছিল।

ট্রায়াল রানে অংশ নেওয়া সংশ্লিষ্টরা জানান, টানেলে দুটি টিউব রয়েছে। একটির ভেতর দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামমুখী যানবাহন প্রবেশ করবে। অন্যটি দিয়ে চলবে চট্টগ্রাম শহরমুখী যানবাহন। দুটি টিউবেই নিরাপত্তা ট্রায়াল রান হয়েছে। গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়লে কীভাবে দ্রুত উদ্ধার করা যায়, তা দেখা হয়েছে। অগ্নিনির্বাপণ পরবর্তী মহড়া দেওয়া হয়েছে।

ট্রায়াল রানে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিটের ২৫ সদস্য, নৌবাহিনীর একটি ইউনিট, ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এ সময় সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খোন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সেতু সচিব মঞ্জুরুল ইসলাম ও টানেল প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বলেন, নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে এটা ছিল চূড়ান্ত মহড়া, যা সফলভাবে শেষ হয়েছে। টানেলের ভেতরে একটি ডামি গাড়িতে আগুন লাগে। ৩ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে সেই আগুন নেভায়। নৌবাহিনীর বোমা ডিসপোজাল টিমও এতে অংশ নেয়।

আবদুল মালেক আরও জানান, টানেলের ভেতরে কোনো গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়লে তা আনোয়ারা প্রান্তে অবস্থিত কন্ট্রোল রুমের মনিটরে দেখা যাবে। তারপর প্রয়োজন অনুসারে টানেলে কর্মরত রেসকিউ টিম, মেইনটেন্যান্স টিম, ফায়ার ফাইটার টিম ও ফাস্ট এইড টিম অল্প সময়ের মধ্যে ছুটে যাবে। তারা গাড়ি ও যাত্রীদের উদ্ধারে কাজ করবে। টানেলের ভেতরে অগ্নিনির্বাপণের জন্য ফায়ার হাইপ্রেন্টসহ অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি রয়েছে।

কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে চীনের সাংহাইয়ের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তুলতে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে টানেল প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। নির্মাণকাজ করেছে চীনের কোম্পানি ‘চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

তথ্য অনুযায়ী, ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই টানেলে প্রতিটি টিউব বা সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। একটির সঙ্গে অপর টিউবের দূরত্ব ১২ মিটারের মতো। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট চারটি লেন তৈরি করা হয়েছে। টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক।

ঊষার আলো-এসএ