ঊষার আলো রিপোর্ট : সুনামগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। রোববার হরতাল চলাকালে শহরের পুরাতন বাস স্টেশন এলাকায় ২ ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এদিন নোয়াখালীর সেনবাগে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় যুবলীগ। এ সময় শটগানের গুলিতে বিএনপির অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হন। এর মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হরতালের সমর্থনে মিছিল চলাকালে জমির মুন্সি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সুনামগঞ্জ : বেলা ১১টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে পুরাতন বাস স্টেশন এলাকায় মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে চায়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে শহরের আরপিননগর ও জামতলা এলাকা থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। পুলিশও টিয়ার শেল ও ইটপাটকেল ছুড়ে তাদের হটানোর চেষ্টা করে।
এভাবে থেমে থেমে ঘণ্টাব্যাপী দুপক্ষের সংঘর্ষ চলে। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে পুলিশ জনবল বৃদ্ধি করে দুই পাড়ায় ঢুকে বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আরপিননগর এলাকা থেকে চার যুববকে আটক করা হয়। সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭ জন পুলিশ, ৩ জন সাংবাদিক। বাকিরা বিএনপির নেতাকর্মী। সংঘর্ষের পর পুরো শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরতে পুলিশ বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) রাজন কুমার দাস জানান, হরতালকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীরা নাশকতা সৃষ্টি করে পরিস্থিতি অশান্ত করতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তাৎক্ষণিক টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নোয়াখালী : জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ জানান, সকাল ৮টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সেনবাগের জমির মুন্সির হাট এলাকায় নোয়াখালী-চট্টগ্রাম হাইওয়ে অবরোধ করে। এ সময় যুবলীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় শটগান ও দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ সময় বিএনপির ২০ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে সেনবাগ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলাউদ্দিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত অন্যরা হলেন-মো. আলম, আবু সুফিয়ান, রুবেল মিয়া, বাদশা মিয়া, ইমরান আহমেদ, মোশাররফ হোসেন, মনির হোসেন, আবুল কাশেম, ইকবাল হোসেন, সবুজ মিয়া, মোজাম্মেল হোসেন, মহিন উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, অন্তর হোসেন, রাব্বি, রুবেল ও সঠিক উল্লাহ। বিএনপির জাতীয় কমিটির সদস্য ও সেনবাগ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মফিজুর রহমান জানান-আহতদের চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। এ ব্যাপারে সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে পুলিশ গিয়ে কাউকে পায়নি। এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগও দেননি।
ঊষার আলো-এসএ