ঊষার আলো ডেস্ক : আজ অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন । বাঙালির স্বাধীনতার অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস এই হল এই মার্চ মাস। এই মাসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এই মাসেই বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি শাসকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘৭ কোটি মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। মরতে যখন শিখেছিই তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেবো। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা।’ ১৯৭১-এর ৭ মার্চ তৎকালীন রেসর্কোস ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) দেওয়া সেই ঐতিহাসিক ভাষণের সময় মুহুর্মুহু গর্জনে উত্তাল ছিল এক বিসাল জনসমুদ্র। লাখো লাখো কণ্ঠে গর্জে ওঠা একই আওয়াজ উচ্চারিত হতে থাকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। ঢাকাসহ গোটা দেশে উড়তে থাকে সবুজ জমিনে আঁকা লাল সূর্যের পতাকা।
২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক সেই ৭ মার্চের ভাষনকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রæয়ারি ভাষার জন্য যে আগুন জ্বলে উঠছেলি তা মার্চে এসে যেন তা ছড়িয়ে পরে বাংলার সর্বত্র। তারপরে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬-এর ছয় দফা ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সিঁড়ি বেয়ে একাত্তরের মার্চ বাঙালির জীবনে নিয়ে আসে নতুন এক বার্তা। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা বার্তা। এর আগে, ২৫ মার্চ রাত ১টার দিকে পাকিস্তানি সৈন্যরা বঙ্গবন্ধুকে তার নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করে।
২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার লক্ষ্যে ‘অপারশেন সার্চলাইট’ নামে বাঙালি নিধনে নামে। ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় সৈন্যরা নির্বিচারে হাজারো মানুষকে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ছাত্র ও শিক্ষককে হত্যা করে। এরপরের ঘটনাপ্রবাহ প্রতিরোধের ইতিহাস বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে প্রতি ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা হয়। আবালবৃদ্ধবনিতা সকলে যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বের বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ লাভ করে স্বাধীনতা।
(ঊষার আলো–এফএসপি)