বদিউজ্জামান, সাতক্ষীরা : আগামী ১৮ মার্চ সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নির্বাচন। এ উপলক্ষে গঠন করা হয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে ৪৫৩ জন ভোটার আইনজীবী ভোট প্রদানের মধ্য দিয়ে এক বছরের জন্য কর্যনির্বাহী কমিটির নেতা নির্বাচন করবেন। গতকাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশন।
জানা যায়, ১৮৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৪৫৩ জন। সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এটি একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হলেও ভোটের মাঠে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বরাবরই লক্ষ্য করা যায়। যদিও দেশের অন্যান্য বারে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি পন্থী আইনজীবীদের মধ্যে পৃথক প্যানেলে নির্বাচন হলেও এখানে তেমনটা লক্ষ্য করা যায়না। নির্বাচনে প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দলের তৎপরতা তেমন লক্ষ্য করা না গেলেও ভেতরে ভেতরে নির্বাচনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। তবে এবারের নির্বাচনে সাধারন ভোটার আইনজীবীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের বর্হি:প্রকাশ ঘটতে পারে বলে মনে করছেন অনেক ভোটার আইনজীবী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সিনিয়র ভোটার আইনজীবী পত্রদূতকে জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ জজ আদালত হতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যাতায়াতের পথের বিষয়টি বর্তমান কমিটি সমাধান করতে না পারার কারনে আগামী রমজান ও বর্ষা মৌসুমে আইনজীবী সহ বিচারপ্রার্থী জনগনের সীমাহীন ভোগান্তি এবং গত ১৫ মাস যাবৎ জেলার একমাত্র নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারক না থাকা সহ বিভিন্ন কারনে সমিতির সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই আগামী ১৮ মার্চের নির্বাচনে ভোটার আইনজীবীগন ভোট প্রদান করবেন বলে জানিয়েছেন আদালত পাড়ার অনেক আইনজীবী।
এবারের নির্বাচনে চুড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, জাতীয়তাবদী আইনজীবী ফোরাম, সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি এড. মোঃ আবুল হোসেন ও জেলা বিএনপি’র সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. বি, এম মিজানুর রহমান পিন্টু।
সহ- সভাপতির ১টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন-জেলা জাসাসে’র আহবায়ক এড. সৈয়দ এখলেছার আলী বাচ্চু ও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য এড. মোঃ গোলাম মোস্তফা।
সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য এড. আ, ক, ম রেজওয়ান উল্লাহ সবুজ ও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধ এড. মোঃ ইউনুচ আলী।
যুগ্ম-সম্পাদকের ১টি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৩ জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, এড. মোঃ জহুরুল হক, এড. শেখ মোস্তাফিজুর রহমান (শাহনওয়াজ) ও মোঃ সাইদুর রহমান। কোষাধ্যক্ষের ১টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৩ জন প্রার্থী। তারা হলেন, এড. জেড এম আব্দুল্যাহ মামুন, এড. মোল্যা মোঃ আব্দুস সোবহান মুকুল ও এড. মোঃ রফিকুল ইসলাম। সহ-সম্পাদক লাইব্রেরীর ১টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ২ জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, এড. মোঃ আব্দুল জলিল ও এড. মোঃ হুমায়ূন কবীর। সহ-সম্পাদক ক্রীড়া ও সংস্কৃতির ১টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪ জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, এড. অসীম কুমার মন্ডল, এড. স,ম মমতাজুর রহমান মামুন, এড. আ, ক, ম সামছুদ্দোহা খোকন ও এড. শেখ হুমায়ূন কবীর। সহ- সম্পাদক মহিলা পদে একমাত্র প্রার্থী এড. শাহানা ইমরোজ মনোনয়ন পত্র দাখিল করায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আইনজীবী সমিতির নারী আইনজীবীদের মধ্যে সৈহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় তাঁরা প্রতি বারের ন্যায় এবারও উক্ত পদে একক প্রার্থী দিতে ভুল করেননি।
এছাড়া সদস্যের ৩টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, ৮ জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, এড. আছাদুল্যাহ আছাদ, এড. মোঃ তারিক ইকবাল অপু, এড. মোঃ নজরুল ইসলাম জীবন, এড. জি, এম ফিরোজ আহমেদ, এড. মোঃ সাইদুজ্জামান জিকো, এড. সুনীল কুমার ঘোষ, এড. স্বপন কুমার মন্ডল ও এড. ই-জে, এম হাসীব।
এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন, এড. মোঃ আব্দুল জলিল (১) এবং কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, এড. কুন্ড তপন কুমার , এড. নাজমুন নাহার ঝুমুর, এড. মোঃ আনিছুর কাদির ময়না ও এড. মোঃ জিয়াউর রহমান।