গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্যরা রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা জানান শিগগিরই তিনি ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনে যাবেন।
গুম তদন্ত কমিশনের সঙ্গে বৈঠক : বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে গুমের ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান কমিশন সদস্যরা। ‘জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল’ যা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত সেসব স্থান পরিদর্শনের অনুরোধ জানান তারা। প্রধান উপদেষ্টা ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করলে গুমের শিকার ব্যক্তিরা আশ্বস্ত হবেন এবং অভয় পাবেন বলে জানান তারা। বৈঠকে কমিশন সদস্যরা কয়েকটি গুমের ঘটনার নৃশংস বর্ণনা দেন। এমনকি ছয় বছরের শিশুও গুমের শিকার হয়েছে বলে কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে।প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের তদন্তে যে ঘটনাগুলো উঠে এসেছে তা গা শিউরে ওঠার মতো। আমি শিগগিরই আয়নাঘর পরিদর্শনে যাব।’
ডব্লিউইএফ সম্মেলনে যোগদান : সংবাদ সম্মেলনে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, সুইজারল্যান্ড সফরে প্রধান উপদেষ্টা যাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন তার মধ্যে রয়েছেন-জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব, বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। এ ছাড়া কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করবেন ড. ইউনূস। এরমধ্যে রয়েছেন-সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রীর কন্যা শেখ লতিফা বিন মুহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাখদুম, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান লেগার্ডে, ফেসবুকের মূল কোম্পানি ‘মেটা’ গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট মিকল্যাড, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড এবং বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক নিকোজি ওকোনজো ইওয়েলা। পাশাপাশি কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকার দেওয়ার কথা রয়েছে।
আজাদ মজুমদার বলেন, এই সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এই সম্মেলনে বাংলাদেশ বিষয়ক আলাদা একটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী নেতা এবং কয়েক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা যোগ দেবেন। তার মতে, এই সংলাপ বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, উন্নত দেশগুলোই এ ধরনের সংলাপ করার সুযোগ পায়। বাংলাদেশ প্রথমবার এই সুযোগ পেয়েছে। বর্তমান সরকার আশা করে বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দেশের ব্যবসায়ীদের আস্থা বাড়াতে সহায়ক হবে এই উদ্যোগ।
এক প্রশ্নের জবাবে উপ-প্রেস সচিব বলেন, এ ধরনের সম্মেলনে যে অগ্রগতি হয়, তা হলো পারস্পারিক আস্থা বৃদ্ধি। ফলে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী নেতা এবং বড় বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। তিনি আরও বলেন, এখানে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশের ব্যাপারে বিনিয়োগকারীদের ধারণা দেওয়া হবে।
আজাদ মজুমদার বলেন, বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা এর আগে যখন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছেন, তখন সবার কাছে কমন আহ্বান ছিল, ‘আপনারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ান’। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের তারুণ্য ও যুবশক্তির সুবিধা নিতে বিভিন্ন দেশকে আহ্বান জানিয়েছেন। এবারের সম্মেলনে সেই আলোচনাই হবে। একবাক্যে বললে, সব বিনিয়োগকারীর কাছে একটাই আহ্বান থাকবে, ‘বাংলাদেশে আসুন, বিনিয়োগ করুন, অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে শামিল হোন’।
আজাদ মজুমদার আরও বলেন, ডব্লিউইএফ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে গ্যাস, বিদ্যুতের দাম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আজাদ মজুমদার বলেন, বিনিয়োগ শুধু গ্যাস, বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করে না। এরসঙ্গে অনেককিছু জড়িত। সব বিষয় বিনিয়োগকারীদের কাছে ব্যাখ্যা করা হবে।
ঊষার আলো-এসএ