UsharAlo logo
বুধবার, ১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কৃষ্ণচূড়ায় রঙ্গিত জাবি ক্যাম্পাস

ঊষার আলো রিপোর্ট
মে ১৩, ২০২৫ ৫:১১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে অতিষ্ঠ জনজীবন। চারদিক যেন নিষ্প্রাণ। তবে এর মধ্যেই সবুজ পাতার ডগায় উজ্জ্বল লাল ফুল কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিতে এনেছে ভিন্ন আমেজ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোণায় কোণায় দেখা মিলবে কৃষ্ণচূড়া ফুলের। ক্যাম্পাসে সবুজের মাঝে এর লাল আভা দেখে মনে হয় আগুন জ্বলছে। আনাচে-কানাচে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম পরিবেশ নৈসর্গিক সৌন্দর্যেরই জানান দিচ্ছে।

কৃষ্ণচূড়া গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ‘ডেলোনিক্স রেজিয়া’। এটি ফ্যাবেসি পরিবারভুক্ত একটি বৃক্ষ, যার উৎপত্তিস্থল মাদাগাস্কার। ১৮৪০ এর দশকে এ গাছ ভারতীয় উপমহাদেশে আনা হয়। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকায় দেখা গেলেও, জাহাঙ্গীরনগরের উপস্থিতি সংখ্যায় ও শোভায় অনন্য।

জাহাঙ্গীরনগরের কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য দেখে বারবার মনে পড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই পঙক্তি, ‘অশেষ রঙে, আলো-ছায়ায়, জীবন হয়ে ওঠে নানান কথায়।’

এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে মে মাসের গোড়ায় যখন আগুন রাঙা কৃষ্ণচূড়া গাছে গাছে ফুল ফোটে, তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠে এক রঙিন কাব্যগ্রন্থ। কৃষ্ণচূড়ার নিচে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির দিকে তাকালে মনে হয়, সময় থেমে গেছে। কেবল রঙ আর আলো দিয়ে এক নিঃশব্দ গল্প বলছে গাছেরা।

বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় জাবির যাত্রা শুরু ১৯৭০ সালে। শুরু থেকেই এখানকার পরিকল্পিত নির্মাণ, খাল-বিল, পাখি ও বৃক্ষরাজির সমন্বয়ে গড়ে ওঠে এক অনন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ। আর এ নিসর্গের হৃদয়ে বসে আছে কৃষ্ণচূড়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন থেকে শুরু করে সমাজবিজ্ঞান, বটতলা, ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বর প্রতিটি অলিগলিতে কৃষ্ণচূড়া ছড়িয়ে দেয় তার অনির্বচনীয় রূপ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মারুফ বলেন, ‘প্রথম যেদিন ক্যাম্পাসে এসেছিলাম, কৃষ্ণচূড়ার দিকে তাকিয়ে মনে হয়েছিল, এ জায়গাটাতেই হয়তো আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর স্মৃতিগুলো গড়ে উঠবে।’

কৃষ্ণচূড়া হয়ে উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন্ত চিহ্ন। এটি শুধুই একটা ঋতুবদলের আলামত নয়, বরং সময়ের ক্যানভাসে আঁকা এক চলমান শিল্পকর্ম। এ গাছকে ঘিরে গড়ে উঠেছে সংস্কৃতি, স্মৃতি আর স্বপ্নের এক অনন্য জগৎ। আর সেই জীবন-কথার মাঝে জাহাঙ্গীরনগরের কৃষ্ণচূড়ারা আজও ছড়িয়ে দিচ্ছে এক অমলিন রঙ।

ঊষার আলো-এসএ