ঊষার আলো প্রতিবেদক : নগরীর খালিশপুরে চা দোকানদার মোঃ লিটন শেখ(৪২) হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় মডেল সাকিব নামের এজাহারভুক্ত আরও একজন আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সে বুধবার (৯ জুন) আদালতে স্বাকারোক্তীমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। এ নিয়ে লিটন হত্যা মামলায় ১০ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তার মধ্যে চারজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খালিশপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (তদন্ত) নিমাই চন্দ্র কুন্ডু এ তথ্য জানান।
তিনি আরও বলেন, নতুন করে গ্রেফতারকৃত হলো কাশিপুর ভাটিয়াপড়া মিস্টান্ন ভান্ডারের পিছনের বাসিন্দা জালালের ছেলে মডেল সাকিব (২০)। নিহতের স্বজনরা মঙ্গলবার (৮ জুন) সন্ধ্যায় দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি লিচুতলা নামক স্থান থেকে তাকে আটক করে পুলিশে দেয়। সে বুধবার (৯ জুন) খুলনা চীফ মেট্রোপলিটন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে বলে তিনি জানান। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানকারী অন্য তিন আসামী হলো- কাশিপুর বাইতিপাড়ার বাসিন্দা একই এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে আল আমিন (২১), নগরীর বাস্তুহারা ১২নং রোডের বাবুল শেখের ভাড়াটিয়া বাবু শেখের ছেলে রাজু (২৪) ও উত্তর কাশিপুর বাইতিপাড়া রেল লাইন এলাকার লোকমান শেখের ছেলে আসলাম (২০)। গ্রেফতারকৃত বাকী ছয় আসামি হলো, কাশিপুর বাইতিপাড়ার বাসিন্দা আবুল কালামের ছেলে রাসেল হোসেন(২৮), উত্তর কাশিপুর কবরখানা রোড মহির বাড়ির ভাড়াটিয়া আলামিন(২৪), উত্তর কাশিপুর মুরাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া মৈল এর ছেলে আব্দুল্লাহ(৩৯), উত্তর কাশিপুর হোসেনের ছেলে হেলাল(২০), কাশিপুর পদ্মারোড তেতুলতলার মোড় হেমায়েত ডাক্তারের বাড়ির ভাড়াটিয়া মনির হোসেনের ছেলে মোঃ মাহির(২১) ও দৌলতপুর দেয়ানা মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা মৃতঃ বাদশা মিয়ার ছেলে আশিকুর রহমান (১৯)।
খুনের ঘটনায় লিটনের স্ত্রী হেলেনা বেগম বাদী হয়ে খালিশপুর থানায় জয়নাল, শাহাদৎ, আজা লিটন, রাজু, রোকন, আল আমিন, আসলাম, টিক্কি রুবেল, আকিব, সাকিব, আব্দুল্লাহ, এলকো সোহেল, গরু মামুন, মাড়ুয়া আল আমিন, হেলাল, সাব্বির, মোঃ মাহির, বাবু, আশিকুর রহমানসহ মোট ১৯ জনের নামে এজাহার করেন। মামলায় আরো ১০/১৫ জনকে আজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১০ আসামীকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে উত্তর কাশিপুর মুরাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া মৈল-এর ছেলে আব্দুল্লাহ এলাকার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে অর্ধ ডজন মাদক মামলা রয়েছে বলে ১৯ এপ্রিল আদালতে প্রেরিত প্রতিবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসব তথ্য উল্লেখ করেন। ওই প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, চা বিক্রেতা লিটন মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের ছোট ভাই ইমামুল বলেন, এ হত্যাকান্ড নিয়ে তারা মুখ খুলতে পারছেন না। প্রভাবশালীদের চাপের মুখে পুরো পরিবার। এছাড়া ঘাতকরা এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের ধরছে না। ঘাতকদের ঘুরাফেরার বিষয়টি পুলিশকে অবগত করলেও তেমন কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে তারা নিজেরাই আসামী আটক করে পুলিশে দিচ্ছে। এ পর্যন্ত যত আসামী আটক করা হয়েছে তার বেশীর ভাগই তারা ধরেছেন বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, পুলিশের কাজ তাদের বাধ্য হয়ে করতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৭ এপ্রিল দিনগত রাত ১টার দিকে লিটনকে কয়েকজন ফোন করে ডেকে নেন। এ সময় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে লিটন ও আমিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। তাদের চিৎকারে স্বজনরা ছুটে এসে লিটন ও আমিন উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিটনকে মৃত ঘোষণা করেন। মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় তাকে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা খুন করে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
(ঊষার আলো-এমএনএস)