UsharAlo logo
রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালিশপুরে শিক্ষককে কুপিয়ে জখম, ১৩ দিনেও আসামীদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ

koushikkln
অক্টোবর ১, ২০২৩ ১০:৩৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

#মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ক্ষোভ#

ঊষার আলো রিপোর্ট: খালিশপুরে মাওলানা ভাসানী বিদ্যাপীঠের সিনিয়র শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র সরকারকে (৫৭) কুপিয়ে গুরুতর জখম করার ১৩ দিন পার হলেও কোন আসামী গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি পুলিশ। এঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আহত শিক্ষকের পাশে দাড়িয়েছেন খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ।

খোজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে স্কুলের ক্লাশ শেষে বিকাশ চন্দ্র সরকার বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয়ে খালিশপুর সড়ক ও জনপদ অফিসের সামনে পৌছালে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা ৫-৬ জন সন্ত্রাসী দেশিয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা রাম দা দিয়ে এলোপাথাড়ি শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এতে শিক্ষক বিকাশ মাথা, ঘাড়, হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এসময় সন্ত্রাসীরা তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এঘটনায় স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য এস এম জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে খালিশপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (যার নং-৩০)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মাওলানা ভাসানী বিদ্যপীঠের আয়া পদে ভ‚য়া কাগজ এবং নাম পরিবর্তন করে নিয়োগ পান আকবারী খাতুন (৫০)। পরবর্তিতে তার আসল নাম প্রকাশ পেলে এবং এবিষয়ে সকলের জানাজানি হলে আকবারী খাতুনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এঘটনার পূর্বে শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র সরকারকে আসামী আকবারী খাতুন তার পক্ষে কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এতে বিকাশ চন্দ্র সরকার রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আকবারী খাতুন, তার ছেলে মোঃ সাজ্জাদ (৩৩) ও সন্ত্রাসীদের দিয়ে এ হামলা চালায়। এঘটনায় আকবারী খাতুন, মোঃ সাজ্জাদসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে মামলার আসামী করা হয়েছে। এদিকে শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র সরকারের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা জানতে পেরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এসময় তারা শিক্ষক বিকাশের চিকিৎসার খোজখবর নেন এবং এবিষয়ে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন।

এদিকে ঘটনার ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও কোন আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এঘটনায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডু বলেন, ‘আসামীরা এই জঘন্য হামলা চালানোর পরও বহাল তবিয়তে এলাকায় চলা ফেরা করছে। অথচ আজ অবধি একজনকেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। আমরা বিকাশ চন্দ্র সরকারের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি। সেই সাথে আসামীদের অতি দ্রæত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী জানাই।’ তিনি আরও বলেন, দ্রæত আসামীদের গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিত না করলে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে মানববন্ধনসহ নানা ধরণের কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
এদিকে শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র সরকারের আসামীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে খুলনা মেট্র্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেছে মাওলানা ভাসানী বিদ্যাপীঠের শিক্ষকবৃন্দ। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আশরাফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ পুলিশের কাছে দিয়েছি। ভিডিও ফুটেজে আসামীদের চেহারা স্পষ্টভাবে বোঝা গেলেও পুলিশ এখনও তাদের গ্রেফতার করছে না। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করছে। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের এধরণের কর্মকাণ্ডে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। স্কুলের সভাপতি হিসেবে আমি দ্রæত এঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
এবিষয়ে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, আমরা ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। এজন্য আমরা প্রযুক্তিগত সহযোগীতা চেয়েছি। পুলিশের গড়িমসি বিষয়ে তিনি বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরিন নানা দ্বন্দ্ব রয়েছে। এতে পুলিশকে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ঊআ-বিএস