UsharAlo logo
শনিবার, ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গৌরব ও অহংকারের দিন ‘মহান বিজয় দিবস’

koushikkln
ডিসেম্বর ১৫, ২০২২ ১১:৪৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরব ও অহংকারের দিন। লাখ লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধার রক্তস্রোত, স্বামী-সন্তানহারা নারীর অশ্রুধারা, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা আর বীরাঙ্গনাদের সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে অর্জিত হয়েছিল মহান এই বিজয়। ৫১ বছর আগে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় বাঙালি জাতিকে এনে দিয়েছিল আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। আজ কৃতজ্ঞ জাতি সশ্রদ্ধ বেদনায় স্মরণ করবে দেশের বীর সন্তানদের। বিজয়ের ৫১ বছর পেরিয়ে এবার ৫২তম বিজয় দিবস। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল নামবে। খুলনাসহ সারা দেশের সব প্রান্তের মানুষ অংশ নেবে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

সাভারে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য বর্ধনের বিষয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিক্তি সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, ইতিমধ্যে পুরো স্মৃতিসৌধের পাকা অংশে ধোয়ামোছার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে জাতীর সূর্যসন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
বিজয় এলো যেভাবে : পূর্ব বাংলার মানুষের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর শোষণ, বঞ্চনা আর অবহেলা চরম আকার ধারণ করলে প্রতিবাদে ক্রমে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এই অঞ্চল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখিয়ে তারা ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভকারী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে টালবাহনা শুরু করে শাসকগোষ্ঠী। ফলে ক্ষোভে-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পূর্ব পাকিস্তান। একাত্তরের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ জনগণের স্বাধীনতার স্পৃহাকে প্রবল করে তোলে। ঢাকা যখন অগ্নিগর্ভ, তখন পাকিস্তানি শাসকচক্র আমাদের মুক্তির স্পৃহাকে দমনের পথ বেছে নেয়। রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে নিরস্ত্র মানুষ হত্যার মাধ্যমে জন্ম দেয় ২৫ মার্চের কালরাতের। এর পরই চূড়ান্ত হয়ে যায় আমাদের পৃথক পথচলার যাত্রা। ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় চূড়ান্ত লড়াই। দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিসংগ্রামের পর পরাজয় মেনে নেয় পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ১৯৭১ সালের আজকের দিনে রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী নিয়ে ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লে. জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজি আত্মসমর্পণ করেন সম্মিলিত বাহিনীর প্রধান জেনারেল জগজিত্ সিং অরোরার কাছে। শুরু হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের পথচলা।

বিজয় দিবস সরকারি ছুটির দিন। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। দেশের বড় শহরগুলোর প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় করা হয়েছে আলোকসজ্জা। হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানাগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। সংবাদপত্র বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করবে, বেতার ও টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে খুলনায় আওয়ামী লীগ, খুলনা সিটি করপোরেশন, বিএনপি, জেলা প্রশাসন, ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবি, জাসদ, বাসদ, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ^বিদ্যালয়, খুলনা প্রেসক্লাব, খুলনা সাংবাদিক ্ইউনিয়ন, বিএমএ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, উদীচী, জেলা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন দল, পেশাজীবী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।