ঊষার আলো ডেস্ক: বাংলাদশে আবহাওয়া অধদিপ্তর হতে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এর প্রভাবে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ০৭ (সাত) নং বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়ছে। এপরিস্থিতিতে মোংলা বন্দরের সভাকক্ষে সকাল ১০টায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসার সভাপতিত্বে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ প্রস্তুতি বিষয়ক জরুরী সভা অনুষ্ঠতি হয়। ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এর কারণে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান সুন্দরবনের নিকটবর্তী হওয়ায় মোংলা বন্দর নিম্নলিখিত ব্যবস্থাদি গ্রহণ করছেঃ ১)
ক। সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সকল ব্যক্তিবর্গ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন। মোংলা বন্দরের সকল প্রকার অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
খ। বাণিজ্যিক সকল জাহাজসমূহকে জেটির পার্শ্বে ত্যাগ করে হারবারিয়া খাল অথবা জেটির বহিনোঙ্গরে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ। নোঙ্গর/মুরিং বয়া অবস্থানকৃত অভ্যন্তরীণ নৌযানসমূকে খুলনা/ভৈরব নদীর উপরের দিকে নিরাপদ স্থানে প্রেরণ করা হয়েছে।
ঘ। মোংলা বন্দরের নিজস্ব জলযানসমূহকে ২ টায়ারে বিদ্যমান বার্থসমূহে নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঙ। বন্দরের জেটি এলাকার অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ও অন্যান্য কার্গো সমূহকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব হতে রক্ষা করতে সিঙ্গেল টায়ারে সুশৃঙ্খলভাবে সাজিয়ে বেধে রাখা হয়েছে।
চ। কার্গো হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্টগুলোকে ইকুইপমেন্ট ইয়ার্ডে সঠিকভাবে বেধে রাখা হয়েছে। যাতে করে ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
২) মোংলা বন্দরের আবাসিকগুলোতে বসবাসরতদের মধ্যে সচেতনাবৃদ্ধি ও জরুরি সেবার জন্য আলাদা আলাদা উপ-নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। মবকের আবাসিক এলাকায় নিচ তলায় বসবাসরত পরিবার ও ব্যক্তিবর্গকে দ্বিতীয় তলায় অবস্থানের বিষয়ে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
৩) মবকের অভ্যন্তরে অন্যান্য এলাকায় বসবাসরত সকল ব্যক্তিবর্গকে মোংলা বন্দরের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তরের বিষয়ে সাইক্লোন সেন্টার হিসাবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তত করা হয়েছে।
৪) ঘূর্ণিঝড়ের সংকেতের পূর্বাভাসের সময়ে সকল ব্যক্তিবর্গকে মাইকিং করে সতর্ক অবস্থায় নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে, এবং ঘরের দরজা-জানালা শক্ত করে বেধে রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
৫) ঘূর্ণিঝড় শুরুর পূর্ব হতে শেষ অবধি এ সংক্রান্ত সকল তথ্য হালনাগাদ ও সমন্বয় সাধনের জন্য মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষে একটি কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকে সকল কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কন্ট্রোল রুমের ফোন: +৮৮০২-৪৭৭৭৫৩৮৩৫
৬) ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি ও বন্দরের কার্যক্রম চালু করতে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাদি স্বাভাবিক করণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকগুলোকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
ক। মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
খ। বিদ্যুৎ সরবরাহ
গ। টেলিফোন যোগাযোগ
ঘ। রাস্তাঘাট/ঝড়ের সাথে সাথে পরিষ্কার করতে হবে।
ঙ। মুরিং/বার্থ
চ। পানি ও পানিয় সরবরাহ
৭) ঘূর্ণিঝড়ে কোন জাহাজ/জলযান মবক চ্যানেলে ক্ষতিগ্রস্থ/ডুবে গেলে তা দ্রুত অপসারণের জন্য কয়েকটি স্যালভেজ প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করা আছে। প্রয়োজনে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের উদ্ধার জলযানের সহযোগিতা গ্রহণ করা হবে।
৮) ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন সময়ে মুরিং বয়ায় থাকা জলযানগুলিকে মবকের টাগ বোট সহযোগিতা করবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেনে, “ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এর জন্য প্রস্তুতি হিসেবে নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও সংশ্লিষ্ট বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। বন্দর চ্যানেলকে নিরাপদে রাখার জন্য দেশি কার্গো ও লাইটারেজ গুলোকে চ্যানেলের বাইরে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়া চ্যানেলে অবস্থানরত ১৩ টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজকে নিরাপদ ও সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে। এছাড়া বন্দর জেটিতে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজগুলো নিরাপদ অবস্থানে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
ঊআ-বিএস