ঊষার আলো ডেস্ক : দীর্ঘদিনের কর্মস্থল প্রাণের সংগঠন ছায়ানটে ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন বরেণ্য সংগীতশিল্পী ও সংগঠক মিতা হক। রবিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর ছায়ানট ভবনে আনা হয় মিতা হকের মরদেহ। সেখানে পরিবারের সদস্য ছাড়াও শেষ বিদায় জানাতে ছুটে আসেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের লোকজন। এসময় শ্রদ্ধা জানাতে আসা বন্ধু, সহকর্মী, স্বজনদের হাতে ছিল ফুল, চোখে জল। এই দিয়েই তাঁরা বিদায় জানালেন প্রিয় শিল্পীকে।
এর আগে রবিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৬টা ২০ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন মিতা হক। বিকালে কেরানীগঞ্জে মিতা হকদের আদি বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হবে।
সুরতীর্থ নামে একটি সংগীত প্রশিক্ষণ দল ছিল মিতা হকের। সেখানে তিনি পরিচালক ও প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু ছায়ানটের সঙ্গে ছিল তাঁর নাড়ির টান। সংগঠনটির ছায়ায় তাঁর বিকাশ ও বেড়ে ওঠা। প্রতিষ্ঠানটির রবীন্দ্রসংগীত বিভাগের প্রধান ছিলেন তিনি। দায়িত্বপালন করেছেন রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন পরিষদের সহ-সভাপতি হিসেবে। কিন্তু আজ তিনি ছায়ানটে আসেন চিরবিদায় নিতে।
শিল্পী মিতা হক ১৯৬৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রথমে তাঁর চাচা ওয়াহিদুল হক এবং পরে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খান ও সনজীদা খাতুনের কাছে গান শেখেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বার্লিন আন্তর্জাতিক যুব ফেস্টিভালে অংশ নেন। ১৯৭৬ সাল থেকে তিনি তবলা বাদক মোহাম্মদ হোসেন খানের কাছে সংগীত শেখা শুরু করেন। ১৯৭৭ সাল থেকে নিয়মিত তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে সংগীত পরিবেশনা করেছেন।
২০১৬ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেন মিতা হক। এরপর কবি রবীন্দ্রনাথের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁকে বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র পুরস্কার দেওয়া হয়। একই বছর চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ‘রবি-চ্যানেল আই রবীন্দ্রমেলা’য় রবীন্দ্রসংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মিতা হককে সম্মাননা দেওয়া হয়। ২০২০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করে।