UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নি:শর্ত ক্ষমা চাইলেন বাবুই পাখি হত্যাকারী

usharalodesk
এপ্রিল ১১, ২০২১ ৯:৩০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : নলছিটিতে অমানবিকভাবে বাবুই পাখির ৩৩টি বাচ্চা পুড়িয়ে মারার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় অনুতপ্ত হয়ে নি:শর্ত ক্ষমা চেয়েছেন ভৈরবপাশা ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামের কৃষক জালাল সিকদার। এমন জঘণ্য কাজ আর কখনো করবেন না বলেও প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন।
ক্ষেতের ধান খাওয়ায় শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে বাঁশের মাথায় মশাল জ্বালিয়ে তালগাছে বাবুই পাখির নীড়ে আগুন ধরিয়ে দেন কৃষক জালাল সিকদার। এতে পুড়ে যায় বাবুই পাখির বেশ কয়েকটি বাসা। আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যায় ৩৩টি ছানা। বিষয়টি নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাখিপ্রেমীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান।
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে সংবাদ ছাপা হলে রোববার (১১ এপ্রিল) দুপুরে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের নির্দেশে এনডিসি আহমেদ হাছান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।
তিনি এ ঘটনার প্রথম প্রতিবাদকারী শিপন মল্লিক, ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনসহ স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন। এদিকে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার শনিবার সন্ধ্যায় জালালকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে আনেন। সেখানে ঘটনার জন্য নিশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন জালাল মল্লিক। তবে তিনি বলেন ৩৩ টি নয় কয়েকটি বাবুই পাখির বাচ্চা মারা গেছে ।
স্থানীয়রা জানায়, ঈশ্বরকাঠি গ্রামের জালাল সিকদারের রোপন করা বোরো ধান প্রায় পাকা হয়েছে। সেই ধান খায় বাবুই পাখি। একই গ্রামের মরহুম আফসার মল্লিকের জমির একটি তালগাছে বাবুই পাখির প্রায় শতাধিক বাসা ছিল। জালাল সিকদারের ধারণা এই তালগাছের বাঁধাবাসা থেকে বাবুই পাখিরা এসে তাঁর ধান খেয়ে নষ্ট করছে। তাই শুক্রবার দুপুরে তিনি বাঁশের মাথায় মশাল বানিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন তালগাছের বাবুই পাখির বাসায়। আগুনে তাপে বড় বাবুই উড়ে যেতে পারলেও মারা পড়ে ৩৩ টি বাচ্চা। স্থানীয় এক যুবক ঘটনার ছবি ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আহমেদ হাছান বলেন, জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী স্যারের নির্দেশে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি।
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুম্পা সিকদার বলেন, আসলে ঠিক কতগুলো পাখির ছানা পোড়ানো হয়েছে, সেটা নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারে না। জালাল সিকদার একজন গরিব কৃষক। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি ভুল স্বীকার করেছেন। জনসম্মুখে ক্ষমা চেয়েছেন ভুলের জন্য।
স্থানীয় যুবক আবদুল্লাহ আল শিপন বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে প্রথম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে অনেকেই আলোচনা সমালোচনা করেছেন। অনেকে আবার আমাকে ভয়ও দেখিয়েছেন। পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে লিখেছি।
কৃষক জালাল সিকদার বলেন, আমি অন্যায় করেছি। নিজের ভুল স্বীকার করছি। জীবনে আর কোন দিন কোন প্রাণিকে মারবো না। আমাকে মাফ করে দিন। আমি না বুঝে কাজটি করেছি।

(ঊষার আলো-এমএনএস)