ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনের ৩ বছর হতে চললো। বিশ্বের অনেক দেশ এ ঘটনায় দেশটির নিন্দা করেছে। কিন্তু রাশিয়ার দিক থেকে এখন পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধের কোনো ইতিবাচক কথা বলা হয়নি। এরমধ্যেই দেশটিতে আয়োজন করা হয়েছে ব্রিকস সম্মেলন।
যেখানে যোগ দিবেন বিশ্বের বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতা। পশ্চিমা বিশ্বের চাপে থেকেও ব্রিকস সম্মেলন আয়োজন করে পুতিন প্রমাণ করলেন তিনি সত্যিই একজন লৌহমানব এবং সফল নেতা।
রাশিয়ার পশ্চিমের কাজান ঙ্গরে গতকাল মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে ব্রিকস সম্মেলন। তিন দিনের এই সম্মেলনে যোগ দিতে বিশ্বের বেশ কয়েকজন নেতা রাশিয়া গেছেন। উদীয়মান অর্থনীতির দেশ ব্রাজিল, রাশিয়া, চীন ও ভারত মিলে ১৫ বছর আগে ব্রিকস জোট গঠিত হয়। পরের বছর এতে যোগ দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর মিসর, ইথিওপিয়া, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে যুক্ত করে এ জোটের সম্প্রসারণ ঘটানো হয়।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর এই প্রথম রাশিয়ায় এত বৃহৎ কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রায় আড়াই বছর আগে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া।
ইউক্রেনে আক্রমণের জেরে পশ্চিমা বিশ্ব নানা অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রাশিয়াকে বাকি বিশ্ব থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ করে ফেলতে চেয়েছে। কিন্তু ব্রিকস সম্মেলন আয়োজন করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেখাতে চেয়েছেন পশ্চিমাদের সেই প্রচেষ্টা কতটা ব্যর্থ হয়েছে।
রুশ সংবাদমাধ্যম প্রেসিডেন্ট পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার কাজান পৌঁছানোর খবর জানিয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংও সম্মেলনে যোগ দিতে সেখানে পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি।
এবারের সম্মেলনে যেসব বিষয় আলোচনায় প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম সুইফটের (দ্য সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিন্যানশিয়াল টেলিকমিউনিকেশনস) প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
পুতিন ব্রিকসের নেতৃত্বে এ ধরনের একটি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছেন। ইউক্রেনে হামলার জেরে ২০২২ সালে সুইফট থেকে রাশিয়ার ব্যাংকগুলোকে বাদ দেওয়া হয়। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যে যুদ্ধ-উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে তা নিয়েও ব্রিকস নেতারা গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।