UsharAlo logo
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুলিশকে মেরে যারা ঝুলিয়ে রেখেছিল সবার পরিচয় পেয়েছি: হারুন

ঊষার আলো ডেস্ক
জুলাই ২৫, ২০২৪ ৭:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিনকে হত্যার পর যারা ঝুলিয়ে রেখেছিল তাদের সবার নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

ডিবিপ্রধান বলেন, যারা পুলিশকে রাস্তায় হত্যার পর ঝুলিয়ে রেখেছিল, তাদের প্রত্যেকের নাম-পরিচয় পেয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, পুলিশ ও ছাত্রলীগ মারলে যারা টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। যারা ঢাকা শহরকে অকার্যকর করার দায়িত্ব নিয়েছিল তাদের মধ্যে সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সাইফুল ইসলাম নিরব, এস এম জাহাঙ্গীর, রফিকুল ইসলাম মজনু ও আমিনুল ইসলামসহ বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মী আমাদের কাছে গ্রেফতার রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি।

হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেফতারদের মোবাইল থেকে অনেক মেসেজ (ক্ষুদেবার্তা) পেয়েছি। দেশের বাইরে থেকে তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ‘নতুন কমিটির দায়িত্ব তোমাদের দেওয়া হয়েছে, যদি নির্দেশনা না মানো তাহলে তোমাদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় ও পরবর্তী সময়ে যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, রেললাইনে আগুন দিয়েছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, পুলিশ হাসপাতালে হামলা ও পুলিশকে হত্যা করেছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালিয়েছে- সেসব লোককে বেছে বেছে বর্তমান বিএনপির বিভিন্ন কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।

‘পুলিশকে যদি মনোবল ভেঙে দেওয়া যায় তাহলে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির যে ষড়যন্ত্র তা সফল হবে। সেই মানসিকতা নিয়েই গত বছরের ২৮ অক্টোবরও পুলিশের ওপর হামলা করেছিল। সেসময় একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ হাসপাতাল ও প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর করা হয়। স্বাধীনতাবিরোধী চক্রটি আবারও পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন-হামলা ও কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। এটা কি কোনো সভ্য দেশের মানুষের পক্ষে সম্ভব?’ বলেন গোয়েন্দাপ্রধান।

তিনি বলেন, ডিবি ও থানা পুলিশ ঢাকার বিভিন্ন মহল্লায় অভিযান পরিচালনা করছে। যারা সরকারি ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা করেছে, অগ্নিসংযোগ করেছে ও পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আবার এটাও বলে রাখি, কাউকে অযথা হয়রানি করা হবে না।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে হারুন বলেন, পুলিশের কোনো সদস্য সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে- যদি এমন সংবাদ পান তবে আমাদের জানাবেন।

হামলায় অর্থের জোগান কীভাবে এসেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের ভেতর ঢুকে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির নব্য কমিটির নেতারা উপরের নির্দেশ পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর চালিয়েছে, এটি তাদের পূর্বপরিকল্পিত। পরিকল্পিত না হলে এত দ্রুত সময়ের মধ্যে বাইরে থেকে ঢাকায় নিয়ে এলো কীভাবে?

‘আর তাদের কাছে খাবার, পানি, অস্ত্র, লাঠি পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেছে জামায়াত-বিএনপিপন্থি কিছু উঠতি ব্যবসায়ী। তাদের অনেককেই আমরা গ্রেফতার করেছি, বাকিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। যারা মাঠপর্যায়ে টাকা বিলি করেছে তাদেরও আমরা গ্রেফতার করেছি। তাদের কাছ থেকে আমরা সব তথ্যই পেয়েছি।’ যোগ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশের ওপর এর আগেও হামলার ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু এবার পুলিশের ওপর হামলা নৃশংসতম, এতে করে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভেঙে যাবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ যোদ্ধা হলো পুলিশ।

২০১৩ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত পুলিশ জীবন দিয়ে হলেও বারবার তার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেছে। একটি চক্র বারবার আক্রমণ করেছে, কিন্তু পুলিশের জন্য সফল হতে পারেনি। এজন্যই তারা এখন পুলিশের ওপর আক্রমণ করছে। তবে এতে পুলিশের মনোবল মোটেও ভাঙবে না, বরং পুলিশের মনোবল শক্তিশালী হয়ে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনবে।