ঊষার আলো রিপোর্ট : প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩ এর তৃতীয় ধাপের (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) প্রকাশিত ফলাফল বাতিলের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করছে ফলপ্রত্যাশীদের একাংশ। রোববার থেকে মিরপুর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে টানা অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা। তাদির দাবি, সকল শূন্য পদ পূরণসহ পুনরায় ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অনশন ও লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তারা।
আন্দোলনকারীরা জানান, সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের ফল পুনরায় প্রকাশের দাবিতে টানা তিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। অথচ এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোন সাড়া নেই। সেনাবাহিনীর কাছে অনুমতি নিয়ে কর্মসূচি অংশ হিসেবে রাতেও অধিদপ্তরের সামনে আমরা অবস্থান করছি। কিন্তু সোমবার বিকালে শান্তিপূর্ণ এই কর্মসূচিতে অধিদপ্তরের কর্মচারী ও সিকিউরিটি গার্ডরা নিন্দনীয় আচরণ করেছে। তারা আমাদের গায়ে হাত তুলেছে, পুরুষ প্রার্থীদের মারধর করেছে, নারী প্রার্থীদেরকে ধাক্কাধাক্কি করেছে, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে।
এ ধরনের আচরণের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে অতি দ্রুত পদসংখ্যা বৃদ্ধি করে ফলাফলের একটা যৌক্তিক সমাধান চান।
এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। তারা বলেন, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে এমন স্বৈরাচারি মনোভাব কিছুতেই কাম্য নয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা থেমে যাবো না। প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দিবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
গত ৩১ অক্টোবর প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩ এর ৩য় ধাপ (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) এর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৪৬ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৬ হাজার ৫৩১ জন পরীক্ষার্থী চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। এ ক্ষেত্রে ৩৯ হাজার ৬৬৮ জন পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। এ বিষয়ে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য- সরকারি চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে সাধারণত একটি শূন্য পদের বিপরীতে ৩ জন কিংবা ৪ জন প্রার্থীকে ভাইবার জন্য নির্বাচন করা হয়। সেক্ষেত্রে প্রাইমারী নিয়োগের ক্ষেত্রে শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও একটি আসনের বিপরীতে গড়ে ১ অনুপাত ৭.০৭ শতাংশ বিবেচনায় নেওয়া হয়। এমনকি কোনো কোনো জেলায় ১ অনুপাতে ১১.৫৯ চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়৷যেখানে একই নিয়োগের ১ম ধাপে ১ অনুপাতে ৩.৭৪ এবং ২য় ধাপে ১ অনুপাতে ৩.৭৮ চূড়ান্তভাবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। সেক্ষেত্রে ৩য় ধাপের ক্ষেত্রে দীর্ঘ ৬ মাস অপেক্ষার পর এ ধরনের ফলাফল প্রকাশ এক ধরনের ষড়যন্ত্র অংশ। তারা এই ফলাফলকে বেকার এবং মেধাবীদের সঙ্গে প্রহসন এবং বৈষম্য বলেই মনে করছেন।
এ ছাড়া একজন পরীক্ষার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় পাস করার পর জেলা শহরগুলোতে গিয়ে কাগজপত্র জমা দেওয়া, ভাইবা দিতে যাওয়াসহ নানাবিধ কাজে আর্থিক, মানসিক এবং শারীরিক পরিশ্রমের স্বীকার হতে হয়। অথচ চূড়ান্ত ফলাফলে এমন বৈষম্য কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ২৯ মার্চ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩ এর ৩য় ধাপের (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া ৯ মে থেকে ১২ জুন ভাইবা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ৬ মাস পর গত ৩১ অক্টোবর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়।
ঊষার আলো-এসএ