ঊষার আলো রিপোর্ট : বগুড়ায় করোনা বিশেষায়িত সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭জন করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অক্সিজেন সরবরাহের সমস্যায় শ্বাসকষ্টের কারণে রোগীদের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলেছেন। এখনও সেখানে ১০জন মুমূর্ষু রোগী রয়েছেন বলে জানা গেছে।
আজ ২ জুলাই শুক্রবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত সময়ে এ রোগীদের মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি থাকা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য গোটা হাসপাতালে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা রয়েছে মাত্র ২টি। অক্সিজেন সরবরাহের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় মুমূর্ষু করোনা রোগীদের বাঁচানো সম্ভাব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এই হাসপাতালের রোগীর ধারণ ক্ষমতা ২০০ হলেও আজ ২ জুলাই শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সেখানে রোগী ভর্তি রয়েছে ২২৩জন। এর মধ্যে ১০জন রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা একেবারেই নিচের দিকে, যাঁদের হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হচ্ছে। হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সংকটের একই চিত্র জেলার অন্যান্য হাসপাতাল গুলোতেও।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার ৩টি হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে শ্বাসকষ্টে থাকা রোগীদের জন্য হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা আছে মোট ২৩টি। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে মাত্র ২টি, শজিমেক হাসপাতালে ১১টি এবং বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল বলেছেন, তাঁদের হাসপাতালে রোগীর যে পরিমাণ চাপ রয়েছে সেখানে অন্তত ২০টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা প্রয়োজন, কিন্তু রয়েছে মাত্র ২টি। একারণে চাহিদা অনুযায়ী রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অধিক শ্বাসকষ্টে থাকা রোগীদের বাঁচানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
বগুড়ার সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী বলেছেন, গত বছর মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত ঘোষণা করার সময়ে আইসিইউ ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা কোনাটাই ছিল না। পরে ৮ শয্যার আইসিইউ চালু করা হয়েছে। কিন্তু হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার বরাদ্দ মিলেছে মাত্র ২টি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ছাড়া আইসিইউ শয্যা করোনা রোগীদের জন্য তেমন কাজে আসে না উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আরও কমপক্ষে ২৫টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দরকার। বরাদ্দ চেয়ে দফায় দফায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো কোন বরাদ্দ মেলেনি।
এদিকে একই সময়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে করোনায় মারা যায় আরও ৩জন।
(ঊষার আলো- এম.এইচ)