ঊষার আলো ডেস্ক : আজ সকাল গড়াতেই অ্যাডিলেড ওভালে সুখবরটা এনে দেয় নেদারল্যান্ডস। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বড় দলকে হারিয়ে যে অঘটনের জন্ম দেয় এরপর সমীকরণটা এমন দাঁড়ায় যে- পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেই প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ চারে বাংলাদেশ। আর যদি-কিন্তুর সব হিসাব এক বিন্দুতে-শুধু জয়! তবে সেই সম্ভাবনার সামনে দাঁড়াতে পারেনি টিম বাংলাদেশ। সব সমীকরণ মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানই নিশ্চিত করে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল।
রবিবার (৬ নভেম্বর) অ্যাডিলেড ওভালে পাকিস্তানের কাছে পাচঁ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে মোট ১২৭ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। জবাব দিতে নেমে ১১ বল আগে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে তিন পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ দল। বাদ পড়েন হাসান মাহমুদ, ইয়াসির আলি এবং শরিফুল ইসলাম। আর তাদের জায়গা নেন এবাদত হোসেন, সৌম্য সরকার ও নাসুম আহমেদ।
পাকিস্তানের পক্ষে ইনিংসের প্রথম ওভার করতে আসেন শাহিন শাহ। চতুর্থ বলে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে আউটসাইড-এজড হন শান্ত, তবে ওই বল পয়েন্ট দিয়ে হয়েছে বাউন্ডারি। প্রথম ওভারে বাংলাদেশ নেয় ৬ রান।
ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা শান মাসুদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ৮ বলে ১০ রান করে আউট হন লিটন। মোট ২১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
তারপর শান্তের সাথে ৫২ রানের জুটি গড়েন সৌম্য সরকার। তাদের জুটি ভাঙে শাদাব খানের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে সৌম্য ক্যাচ তুলে দেন। এক চার ও ছক্কায় ১৭ বলে ২০ রান করেন তিনি। এ জুটি ভেঙে গেলে ক্রিজে আসার পর প্রথম বলেই সাকিবের বিরুদ্ধে আসে এলবিডব্লিউয়ের আবেদন।
আর আম্পায়ারও সাড়া দেন তাতে। কিন্তু সাথে সাথে রিভিউ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সাকিব। রিপ্লেতে দেখা যায়, ব্যাটে লেগেছে বল। আম্পায়াররা মনে করেছেন, ব্যাট মাটিতে লেগেছে, তবে ভিডিও দেখে বোঝা গেছে, ব্যাটে বল লাগার সময় মাটিতে ছিল না। মাঠে স্তব্ধ হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন সাকিব, তবে শেষ অবধি শূন্য রানেই ফিরতে হয় তাকে।
তারপর কিছুক্ষণ পর ফিরে যান শান্তও। ৭ চারে ৪৮ বলে মোট ৫৪ রান করে ইফতেখার আহমেদের বলে বোল্ড হন তিনি। পরে তার বিদায়ের পর ছন্দপতন হয় বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। ১১ বলে পাঁচ রান করে মোসাদ্দেক বোল্ড হন আফ্রিদির বল বুঝতে না পেরে। সোহান কাভারের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে তিন বলে শূন্য রানে দেন ক্যাচ।
আফিফ চেষ্টা করলেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। শেষ অবধি অপরাজিত থাকেন তিনি, ২০ বলে ২৪ রান করেন। পাকিস্তানের পক্ষে চার ওভারে ২২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন আফ্রিদি। ২ উইকেট পান শাদাব খান।
১২৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামে পাকিস্তান। এবাদত হোসেনের ওভারে রিজওয়ান যখন ফেরেন শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে, তখন ২ চার ও এক ছক্কায় ৩২ বলে ৩২ রান করে ফেলেছেন তিনি। অবশ্য দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন নাসুম আহমেদ।
এ স্পিনারের ওভারে ৩৩ বলে ২৫ রান করে সাজঘরে ফেরত যান বাবর আজম। বাবর ও রিজওয়ান ফেরার পর বাংলাদেশ চাপ ধরে রাখে পাকিস্তানের ওপর। এর মধ্যে ১১ বলে চার রান করে মোহাম্মদ নেওয়াজ রান আউট হন লিটন দাসের দুর্দান্ত থ্রোতে। সম্ভাবনা তখন একটু হলেও উঁকি দেয়।
তবে সবকিছুর ইতি ঘটে তাসকিন আহমেদের করা ১৬তম ওভারে। তৃতীয় বলে একটি নো বল করেন তাসকিন। আর ফ্রি হিট থেকে তাকে ছক্কা হাঁকান মোহাম্মদ হারিস। এ ব্যাটারই শেষ অবধি দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের গন্তব্যে।
সাকিব আল হাসানের বলে আউট হওয়ার আগে ১ চার ও ২ ছক্কায় ১৮ বলে ৩১ রান করেন তিনি। এছাড়াও ১৪ বলে ২৪ বলে রান করেন শান মাসুদ। বাংলাদেশের পক্ষে ১ উইকেট করে নিয়েছেন সাকিব, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান এবং এবাদত হোসেন।
(ঊষার আলো-এফএসপি)