UsharAlo logo
রবিবার, ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাত পোহালে ঈদ, শেষ সময়ের কেনা-কাটায় ব্যস্ত নগরবাসী

ঊষার আলো
মে ১৩, ২০২১ ১০:১৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : রাত পোহালেই ঈদ। সন্ধ্যার পর পরই শেষ সময়ের কেনা কাটায় ব্যস্ত হয়ে নগরবাসী। প্রিয় জনের জন্য হাতে করে একটি নতুন কাপড় কিনতে তাই যেন চাঁদ রাতে শেষ সময়ের কেনা কাটায় নগরীর ফুটপাত হতে শুরু করে মাঝারীসহ অভিজাত শপিংমল মার্কেটগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে সর্বত্র। চাঁদ রাতে শেষ সময়ের কেনা বেচা করতে দোকানদারেরা ও সারারাতের প্রস্তুতি নিয়ে আছে। তাছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বেতন বা বোনাস প্রদান করে চাঁদ রাতে। সুতরাং চাঁদ রাতেই এ সকল মানুষদের আনাগোনা বাড়ে। আবার অনেকেই ঈদে বাড়তি আনন্দ হিসাবে চাঁদ রাতে ঘুরে-ঘুরে ঈদ কেনা-কাটা করা টাকে অন্য রকম আনন্দের বলে মনে করে। যে কারণে মহানগরীর মার্কেটগুলোতে সর্বত্র ঈদের শেষ সময়ের কেনা কাটার ঢল নেমেছে। সমগ্র বাজার জুড়ে কেনা কাটায় ক্রেতা আর বিক্রেতার মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে। ক্রেতাদের কানায় কান্নায় পরিপূর্ণ প্রতিটি দোকান। কোথাও যেন পা ফেলার জায়গা পর্যন্ত নেই। রাত পোহালেই ঈদ। ঈদ বাজারে আসা ক্রেতাদের আগমন সমগ্র বাজারকে মুখরিত করে তুলেছে। শাড়ি, জুতা, থ্রী-পিস কর্নার, শিশুদের বাহারী পোশাক, ব্যাগ প্রসাধনীসহ দোকানগুলোতে চলছে কেনাবেচার মহোৎসব। মহিলা-পুরুষ, শিশু-কিশোর, তরুন-তরুনীদের আগমনে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সাজ-সাজ রব বিরাজ করছে। শেষ হলো একমাস সিয়াম সাধনা। সকাল হলেই নতুন পোশাক পরে ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে, আর পরিবার-পরিজন সকলকে নিয়ে নতুন পোশাক উপহারও দিতে হবে তাই চাঁদ রাতে চলছে ঘুরে-ঘুরে কেনাকাটা চলছে, এমনই বক্তব্য বাজারে আসা অধিকাংশ ক্রেতাদের।
সরেজমিনে, বৃহস্পতিবার (১৩ মে) সন্ধ্যা ৬টা। মহানগরীর নিউ মার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, জলিল মার্কেট, হকার্স মার্কেট, ডাকবাংলা মোড়, পিকচার প্যালেস মোড়, মশিউর রহমান মার্কেট, কবি কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, এসএম এ রব শপিং মার্কেট, দরবেশ চেম্বার, নান্নু সুপার মার্কেট, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মার্কেট, দৌলতপুর, খালিশপুর, ফুলবাড়ী, শিরোমনি বিভিন্ন মার্কেটে রাতের কেনা-কাটায় উপচে পড়া ভীড় পরিলক্ষিত হয়েছে। দীর্ঘ রাত পর্যন্ত চলবে এ কেনা-বেচা। যদিও দেশে বৈশ্বিক মহামারি করোনার দ্বিতীয় প্রকোপের কারণে লকডাউন চলছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি তোয়াক্কা না করেই সকলের কেনাকাটার চাপে সামাজিক কোন দূরত্ব বজায় থাকছেনা। যে কারণে থাকছে নতুন করে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি। মার্কেটগুলোতে ঈদের কেনাকাটা বাড়লেও নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই। বেশিরভাগ দোকানে দেখা যায়নি হ্যান্ড স্যানিটাইজার। গাদাগাদি করেও জিনিসপত্র কিনতে দেখা গেছে।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মার্কেট জামা-কাপড় কিনতে আসা সোহেল রানা বলেন, করোনার কারণে ঝুঁকি থাকলেও পরিবারের সকলের জন্য কেনা কাটা করতে হবে। যার কারণে ছোটদের জন্য মার্কেটে আসা। তবে লোকের সমাগম দেখে করোনা সংক্রমনের ভয় লাগছে। মার্কেটে কোন প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। দৌলতপুর বাজারে আসা ক্রেতা শারমিন আক্তার লিপি জানান, করোনার ঝুঁকি রয়েছে ঠিকই কিন্তু পরিবারের কথা চিন্তা করে আসতে বাধ্য হয়েছে। এমনি মানুষের টাকা নাই বললেও কেনা-কাটায় টাকার কমতি নেই।
ক্রেতাদের বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম করছে ব্যবসায়ীরা। সকাল হতে শুরু করে টানা সারাদিন চলেছে অবিরাম কেনা-বেচা। তারপর ঈদের শেষ কেনা-কাটা তথা সন্ধ্যার পর তো কথাই নেই, ত্রেতাদের ঢল নামে। দোকান বন্ধের আগ পর্যন্ত চলছে একেধারে কেনাবেচা।
আধুনিক বিপনীগুলোতেও ক্রেতাদের উপস্থিতি নজরকাড়ার মতো। ফুলবাড়ীগেটের জনতা মার্কেটে আসা ক্রেতা সালেহা বলেন, সন্ধ্যার পর মার্কেটে এসে বিপদে পড়েছি। এতো ভীড় হবে ভাবতে পারিনি। ভেবেছি করোনার মধ্যে শেষদিকে তেমন ভীড় হবে না। হাতে টাকা ছিল না তাই বাজারে আসতে দেরি হয়ে গেল। ঈদের শেষ কেনা-কাটায় ক্রেতাদের আনাগোনা বেশী থাকায় বিক্রেতারা পোশাকের দাম বেশি রাখছে।
আশা এনজিও’র কর্মী জানান, ঈদের ছুটিতে বাড়ি এলাম। বাজারে এসেছি কেনা-কাটা করার জন্য। কিন্তু বাজারে যে পরিমানে ভীড় তাই করোনা সংক্রমনের ভয়ে প্রবেশ করতে ভয় লাগছে।
ঈদের শেষ মুহুর্তে এই ক্রেতা সমাগমে মুখরিত নগরীর সমগ্র বাজার। ক্রেতাদের আগমনে ব্যবসা করতে পেরে ব্যবসায়ীরাও খুশি। তবে কোন ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় নগর ঈদ বাজার রয়েছে সম্পূর্ণ করোনা ঝুঁকিতে।

(ঊষার আলো-এমএনএস)