ঊষার আলো রিপোর্ট : করোনায় বিপর্যস্ত ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। প্রতিদিনই হু হু করে দেশে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু। এরপর হঠাৎ করেই কঠিন লকডাউনের মুখোমুখি ঢাকাসহ সারাদেশ। ৫ এপ্রিল সোমবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে সারাদেশে লকডাউন। ইতিমধ্যে কঠোর এই লকডাউন এড়াতে ও কর্মহীন হয়ে আটকা পড়ার ভয়ে ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে অনেকেই।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাবে- এ আশঙ্কায় ৩ এপ্রিল শনিবার বিকেলের পর রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালে দেখা গেছে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। বিশেষ করে গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী টার্মিনালের দিকে মানুষের ঢল নামতে শুরু করে। মহাখালী বাস টার্মিনালে দেখা যায় টিকিটের জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ সারি। রাত পর্যন্ত একিই রকম অবস্থা ছিল। এরপর ৪ এপ্রিল রোববার সকাল হতেই বিভিন্ন টার্মিনালে দেখা গেছে একই অবস্থা। ছিল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়।
এদিকে একই রকম অবস্থা ছিল সদরঘাটেও। সন্ধ্যার পর রাজধানী ছেড়ে যাওয়া মানুষের ঢল নামে লঞ্চ টার্মিনালে। তবে ভিড় কম ছিল কমলাপুর স্টেশনে। আসনের অর্ধেক টিকিট দেওয়া হচ্ছে ট্রেনে। বন্ধ রয়েছে স্ট্যান্ডিং টিকিটও। সে কারণে কমলাপুরে যাত্রী বাড়লেও ভিড়ের চাপ তীব্র ছিল না।
বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ও ট্রেন স্টেশনে ভিড় আর গণপরিবহনের ঠাসা অবস্থা থেকে করোনা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাবে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।
করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে সোমবার থেকে ১ সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপর থেকেই নগরজীবনে একধরনের পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। অনেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া লকডাউনে জরুরি খাদ্যবাহী ট্রেন ছাড়া সব প্রকার যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। গত বছরের মতোই লকডাউনে শুধু পণ্যবাহী মালগাড়ি চলবে জানিয়ে তিনি বলেছেন, প্রজ্ঞাপনে ঠিক যত দিনের জন্য লকডাউন জারি হবে, তত দিনই যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে না।
গত বছর করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় ২৫ মার্চ সাধারণ ছুটি শুরু হয়েছিল। বন্ধ হয়ে ছিল গণপরিবহন। ৬৮ দিন পর ১ জুন থেকে যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল শুরু হয়। বিআরটিএ সূত্র জানিয়েছেন, গত বছরের মতো এবারও লকডাউনে সব ধরনের যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে পণ্যবাহী যান চলাচল করতে পারবে। পণ্যবাহী যানে যাত্রী বহন নিষিদ্ধ থাকবে।
এ ছাড়া মহামারি আকার ধারণ করা করোনায় দেশে হু হু করে বাড়ছে মৃত্যু ও শনাক্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও ৫৮ জনের। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২১৩। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৬৮৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৩০ হাজার ২৭৭ জনে।
করোনাভাইরাস নিয়ে ৩ এপ্রিল শনিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এদিন সুস্থ হয়েছে আরও ২ হাজার ৩৬৪ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছে ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৭৭৫ জন।
এর আগে ২ এপ্রিল শুক্রবার দেশে আরও ৬ হাজার ৮৩০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এ ছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছে আরও ৫০ জন।
(ঊষার আলো- এম.এইচ)
