UsharAlo logo
রবিবার, ৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হাইব্রিডের ফাঁদে কৃষকের ৩২ একর জমির ধান নষ্ট

ঊষার আলো রিপোর্ট
মে ১৭, ২০২৫ ৪:৫৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ভোলার লালমোহনে নকল হাইব্রিড ধানের ফাঁদে পড়ে কৃষকের ৩২ একর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। উচ্চ ফলনশীল মনে করে তারা নকল ধানের ফাঁদে পরে বড় অংকের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

চলতি মৌসুমে লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের কাজিরাবাদ গ্রামে ২০ জন কৃষক হাইব্রিড ধান রোপণ করেন। কিন্তু চারা থেকে ধান বের হওয়ার পর শীষ শুকিয়ে সব ধান সাদা হয়ে ক্ষেতে নেতিয়ে পড়েছে।

এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি অফিসারের কাছে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। জানা গেছে, দেবীর চর বাজারের বীজ ব্যবসায়ী কামালের কাছ থেকে কৃষকরা এ ধান কিনেছেন। ধান নষ্ট হওয়ার পর কৃষকরা বুঝতে পারেন এগুলো নকল হাইব্রিড ধান।

মাদার এগ্রোসিভ কোম্পানির হাইব্রিড ধান ২ (উইন ৩০৫) জাতের প্যাকেট নকল করে একটি চক্র সারা দেশে এ ধানের বীজ বিক্রি করে।

বীজ ব্যবসায়ী কামালও জানান, তিনি উপজেলার ডাওরী বাজারের জসিম ডিলারের দোকান থেকে এ ধান পাইকারি কিনে নিয়ে বিক্রি করেছিলেন। তিনি বুঝতে পারেননি এগুলো নকল ছিলো।

বদরপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কাজিরাবাদ গ্রামের মাহবুব মাতাব্বর জানান, তিনি প্রায় ১ একর জমিতে এই ধান চাষ করেছিলেন। এর মধ্যে প্রতি গণ্ডায় স্বাভাবিকভাবে ধান হওয়ার কথা ৭ থেকে ৮ মণ করে। সেখানে এই ধান চাষ করে ধান পেয়েছেন প্রতি গণ্ডায় দেড় মণের মতো। একই অভিযোগ করেন আমির হোসেন আব্বাস নামে আরেকজন কৃষক। তিনি ৬ গণ্ডা জমিতে এই ধান রোপণ করেন। ধান বের হওয়ার পর এ অবস্থা দেখে তিনি ক্ষেত থেকে শুক্রবার পর্যন্ত কোনো ধান কাটেননি। ক্ষেতের মাঝেই তার সঙ্গে কথা হয়।

অনেকটা ক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সর্বনাশ করেছে এ নকল ধান বিক্রি করে। প্রতি কেজি ধান ৪৭০ টাকা করে কিনেছিলেন। এই ধান হাইব্রিড জাতের বলা হয়েছিলো। ১ কেজি ধান ২ গণ্ডা জমিতে রোপণ করা যায়। প্রতি গণ্ডায় ৭ থেকে ৮ মণ ধান হওয়ার কথা। এখন ধান সর্বোচ্চ দেড় মণ থেকে ২ মণ করে হতে পারে।

ক্ষেতেই আরেক কৃষক নয়ন মিয়া জানান, এ পর্যন্ত জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত যা খরচ হয়েছে সবই লোকশান হলো এই ধানের বীজের কারণে। ধানগুলো অধিকাংশই শীষ কাত হয়ে ক্ষেতে পরে আছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আবু হাসনাইন জানান, কৃষকদের অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। প্যাকেট নকল করে হাইব্রিড জাতের ধান বলে বিক্রি করা হলেও আসলে ছিলো উপসী জাতের ধান। ওই ধান এ অঞ্চলে এখন ফলন হয় না।

ঊষার আলো-এসএ