প্রেস বিজ্ঞপ্তি : অতিথি পাখি শিকার বন্ধে আইনের প্রয়োগ ও সচেতনতা সৃষ্টির দাবীতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) খুলনা জেলা শাখার উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন শনিবার (৫ নভেম্বর) সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের খুলনা জেলা শাখার সমন্বয়কারী অ্যাড. মোঃ বাবুল হাওলাদার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পৃথিবীর বিশেষত উত্তর মেরুর শীত প্রধান অঞ্চল থেকে জীবন বাঁচাতে পাখিরা প্রতিবছর দলে দলে বিষুবীয় অঞ্চলের তুলনামূলক কম শীতের বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জলাশয়-অরণ্যে আশ্রয় নেয়। অতিথি পাখিরা মূলত শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য এবং খাবারের সন্ধানে আমাদের দেশে আসলেও আমাদের দেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়, উদ্ভিদের বংশ বিস্তার, কৃষি ও মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। যার আর্থিক মানদণ্ডও উল্লেখযোগ্য।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, এক শ্রেণির অসাধু লোক তাদের রসনা বিলাস, আবার কেউ কেউ সামান্য মুনাফার লোভে পাখি শিকারে মত্ত হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, আমাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী এ পাখি রক্ষায় বাংলাদেশে সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে, কিন্তু দুঃখজনকভাবে তা কার্যকর বা প্রয়োগ হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ ব্যাপারে অনেকটাই নির্বিকার। প্রয়োজন ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি। কিন্তু সরকারি দায়িত্বশীল বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো এ ব্যাপারে মারাত্মক উদাসীন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এসব পাখি রক্ষায় রয়েছে বন্যপ্রাণী রক্ষা আইন-১৯৭৪। বন্যপ্রাণী ( সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২’র ১ ও ২নং তফসিলে ৬৫০ প্রজাতির পাখি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উক্ত আইনের ৩৮(১) ধারা মোতাবেক অতিথি পাখি শিকার দণ্ডনীয় ফৌজদারী অপরাধ। এ ধারায় অতিথি পাখি শিকারের অপরাধে ১ বছরের কারাদণ্ড অথবা এক ১ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
এছাড়াও কোনো ব্যক্তি অতিথি পাখির মাংস ও দেহের অংশ সংগ্রহ করে দখলে রাখলে কিংবা বেচাকেনা করলে ৬ মাসের কারাদণ্ড অথবা ৩০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। কিন্তু এ আইনের প্রয়োগ খুবই সামান্য। বক্তব্যে বলা হয়, হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আসা এ পাখিরা আমাদের দেশের ফসলের পরাগায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে উৎপাদন বাড়ায়, পাখিদের মলমূত্রে তৈরী হয় নাইট্রোজেন সার। যা আমাদের দেশীয় প্রজাতির মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ও বৃদ্ধিতে অপরিহার্য ভূমিকা রাখে। আমাদের অক্সিজেনের ভাণ্ডার উদ্ভিদ বা গাছ রক্ষায় পাখির কোনো বিকল্প নেই। দেশের বড় বড় জলাশয়ে যে গাছ উৎপাদন হয়, তা একমাত্র পাখিদের মাধ্যমেই। সুতরাং এ পাখি রক্ষায় অবহেলা বা উদাসীনতার সুযোগ নেই। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাপা’র সদস্য যথাক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধা নিতাই পাল, গণসংহতি আন্দোলনের খুলনা জেলা আহবায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, আইন ও অধিকার বাস্তবায়ন ফোরামের খুলনা বিভাগীয় সভাপতি এস এম দেলোয়ার হোসেন, কে এইচ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা খ ম শাহীন হোসেন, আরেফিন কবীর, হাফিজুর রহমান, মোঃ বেলাল হোসেন, মোঃ আবদুল মতিন প্রমুখ।
(ঊষার আলো-এফএসপি)