ঊষার আলো প্রতিবেদক : জাতীয় বাজেটের আদলে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) ২০২২-২৩ সালের বাজেট ঘোষণা হতে পারে। কোড ভিত্তিক নিয়মে এবারই প্রথম এ বাজেট প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে কেসিসি। তবে এবার বাজেটের আকার হবে বড়। জুলাই মাসের শেষের দিকে এ বাজেট ঘোষণা হতে পারে। এ বাজেট হবে বর্তমান পরিষদের চতুর্থ বাজেট।
কেসিসির অর্থস্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ গাউসুল আযম বলেন, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে চলতি সপ্তাহে বৈঠক হবে। ইতোমধ্যে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে মেয়রের সাথে কথা হয়েছে। তিনি জুলাই মাসের ১৫ তারিখের পর বাজেট ঘোষণার তারিখ মাথায় রেখে বাজেট প্রস্তুত করতে বলেছেন। তিনি বলেন, জাতীয় বাজেটের আদলে কেসিসির বাজেট করার কথা ছিল। জামাইকার ফরমেটে এমন প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তবে সময় স্বল্পতার কারণে এবার ওইভাবে করা সম্ভব হবে না। এবার বিগত দিনের ন্যায় বাজেট তৈরী করা হবে। গতবার (২০২০-২১ অর্থ বছর) করোনা মহামারির কারণে বাজেটের আকার ছোট ছিল। যেহেতু এবার করোনা মহামারি তেমন নেই। এ জন্য এবারের বাজেটের আকার বড় হবে। তবে যাতে প্রস্তাবিত বাজেট ৮৫ ভাগ বাস্তবায়ন করতে পারে-এমনই চিন্তা মাথায় রেখে বাজেটের আকার বাড়ানো হবে।
সিটি কর্পোরেশনের বাজেট কাম একাউন্টস অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, চলতি অর্থ বছরের বাজেট তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে। যা এখন প্রাথমিক পর্যায়ে। বিভিন্ন দপ্তর থেকে হিসাব নেওয়া হচ্ছে। কবে নাগাদ বাজেট চূড়ান্ত হবে তা তিনি বলতে পারেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের আমলে এটি হবে ৪র্থ বাজেট। গত বছরের ২৬ আগস্ট নগর ভবনে বাজেট পেশ করা হয়। বাজেটের লক্ষমাত্রা ধরা হয় ৬শ ৮ কোটি ২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। বাজেটে রাজস্ব ব্যয় ধরা হয় ১৯৮ কোটি ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা এবং সরকারি বরাদ্দ ও উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা হতে উন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হয় ৪০৯ কোটি ১৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। নিজস্ব আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা, সরকার ও বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতিশ্রুতি এবং জনগণের প্রত্যাশার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই এ বাজেট প্রণয়ন করা হয়। ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০৪ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার টাকা। সংশোধীত বাজেটে এর আকার দাঁড়ায় ৩৬২ কোটি ৪৬ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ছিল ৭১.৮৭%। উক্ত বাজেটে রাজস্ব তহবিল এর ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬৬ কোটি ৯৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। যা সংশোধীত বাজেটে দাঁড়ায় ১৫৮ কোটি ৪৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। নিজস্ব তহবিলে অর্জনের হার ৯৪.৮৯%। উন্নয়ন তহবিলে তথা সরকারি অনুদান ও দাতা সংস্থার বিশেষ প্রকল্পে বিগত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩৭ কোটি ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। কিন্তু কেসিসি পায় ২০৪ কোটি ৩ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে অর্জনের হার ৬০.৪৮%। মূলত সরকারের নিকট থেকে আশানুরূপ অর্থ পাওয়া গেলেও দাতা সংস্থা থেকে অনুরূপ বরাদ্দ না পাওয়ার কারণে উন্নয়ন বাজেটে কাঙিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে মেয়র তখন উল্লেখ করেন। গতবারের বাজেটে নতুন কোন কর আরোপ করা হয়নি। এবারও নতুন কর আরোপ করা হবে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়। কর্পোরেশনের সীমানা সম্প্রসারণের মাধ্যমে কর্রোরেশনের আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। কারণ সীমানা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের কাজ এখন প্রক্রিয়াধীন কেসিসির সূত্রে জানা যায়।
উল্লেখ্য, ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল ২৬ আগস্ট। ২০১৮ সালে বর্তমান পরিষদ ক্ষমতায় আসলেও চলতি বছরের বাজেট হবে তাদের দেয়া চতুর্থতম বাজেট। কারণ সাবেক মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির পরিষদ সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা করেন।