বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি : বরিশালের উজিরপুর থানায় রিমান্ডে থাকা নারী আসামিকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়াউল আহসান এবং ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাইনুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ ৫ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে এ অ্যাকশন নেওয়া হয়। বিষয়টি সোমবার দুপুরে নিশ্চিত করেছেন বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারী আসামীকে রিমান্ডে এনে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ মূলত ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। আর ওসি জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও করা হবে। এর আগে রোববার এ ঘটনার তদন্তে রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয় থেকে কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন। উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ি গ্রাম থেকে ২৬ জুন শনিবার ভোরে বাসুদেব চক্রবর্তী টুনু (৪০) নামের এক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়। সে উপজেলার হারতা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত নারায়ন চক্রবর্তীর ছেলে ও ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নিখিল চক্রবর্তীর ভাই । এ ঘটনায় তার ভাই বরুন চক্রবর্তী বাদী হয়ে উজিরপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয় ওই নারীর (৩৫) সঙ্গে তার ভাইয়ের পরকীয়া প্রেমের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। তাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যা মামলায় ওই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে ৩০ জুন বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম উজিরপুর আমলী আদালত তাকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ২লা জুলাই বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পুলিশ হাজির করে ওই নারীকে। ওই নারীর আইনজীবী মজিবর রহমান বলেন, এ সময় ওই নারী আসামী আদালতের সামনে খুড়িয়ে হাঁটছিলেন। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট তার কাছে জানতে চান তার ওপর কোন নির্যাতন করা হয়েছে কিনা। উত্তরে তিনি জানান, তাকে শারিরীক নির্যাতনসহ তার যৌনাঙ্গে আঘাত করা হয়েছে। এরপর বিচারক একজন নারী কনস্টেবলকে দিয়ে তাৎক্ষনিক পরীক্ষা করে তার গোপনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের চিহৃ রয়েছে বলে সত্যতা পান। বিচারক বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ওই নারীর শারীরিক পরীক্ষা শেষে ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ওই নারী আসামীকে নারী চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা ও পরীক্ষা শেষে যথাসময়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এছাড়া অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য বরিশাল পুলিশ সুপারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এদিকে সরকার পক্ষের আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, মূল অভিযোগ থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য এখন এই ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে উজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল আহসান এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। এ ব্যপারে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাইনুল ইসলাম বলেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। মামলা থেকে বাঁচতে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে।
(ঊষার আলো-আরএম)