ঊষার আলো প্রতিবেদক : পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে তেরখাদায় মায়ের হাতে প্রাণ গেল আড়াই মাস বয়সী জমজ দুই কন্যা শিশুর। নিহত মানি-মুক্তার মা কানিজ ফাতেমা কনা প্রথমে নিজের সন্তানদের লেপ ও কম্বলে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে নিজেই মৃত সন্তানদের বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন কনা। তেরখাদা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহুরুল আলম সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, জমজ দুই শিশু নিহতের ঘটনায় তেরখাদা থানায় শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার পর মামলা দায়ের করেন নিহতদের পিতা মাসুম বিল্লাহ। মামলায় একমাত্র আসামী করা হয়েছে তারই স্ত্রী কানিজ ফাতেমা কনাকে। তিনি এখন পুলিশ হেফাজতে। সন্তান জন্মের কিছু দিন আগে থেকেই কনা বাবার বাড়িতে থাকতেন। পরে সেখানে জন্ম হয় জমজ দুই কন্যা শিশুর। তবে তারা ওজন কম নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এ নিয়ে সন্তানের আগামী দিনের কথা ভেবে শুরু হয় দুশ্চিন্তা। অপরদিকে কনা ও তার সন্তানদের শশুর বাড়ি নিয়ে না যাওয়া নিয়েও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছিল।
তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামের একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় পুলিশ মনি ও মুক্তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ নিহত জমজ শিশু দুটির মা কানিজ ফাতেমা কনা, নানা খয়ের শেখ ও নানি শরিফা বেগমকে আটক করেছে। পরে নানা ও নানীকে ছেড়ে দিলেও মামলা দায়ের পর কানিজ ফাতেমা কনাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
স্থানীয়রা জানায়, তেরখাদা উপজেলার কুশলা গ্রামের খায়ের শেখের মেয়ে কণা সন্তান প্রসবের আগে পাশর্^বর্তী বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী গ্রামের শ^শুর বাড়ি থেকে এসে পিতার বাড়িতে থাকতেন। স্বামী মাসুম বিল্লাহ মাঝেমধ্যে শ^শুর বাড়িতে এসে থাকতেন। তবে, বৃহস্পতিবার রাতে তিনি গাংনীতে ছিলেন। ওই রাতে কনা খাবার খেয়ে দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তিনি দেখেন তার পাশে শিশু দুটি নেই। তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা ঘুম থেকে উঠে পাশর্^বর্তী পুকুরে শিশু দুটির ভাসমান লাশ দেখতে পান। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে তেরখাদা থানা পুলিশ ভাসমান অবস্থায় ওই দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে।