তথ্যবিবরণী : বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহের আলোচনা সভা আজ (শনিবার) সকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সপ্তাহটি পালনে এবারের প্রতিপাদ্য ‘এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে সচেতন হই, সকলে মিলে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধ করি’।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পুলক কুমার মন্ডল। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মুনিম লিংকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ড. মোঃ আকিব হোসেন, খুলনা মেডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ শামীম আরা এবং সহকারী অধ্যাপক ডাঃ শাহনাজ পারভীন। অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে বক্তৃতা করেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ এসএম কামাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মোঃ হাফিজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলমগীর কবির এবং বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতি খানজাহান আলী থানার সভাপতি ডাঃ কাজী নেসার উদ্দিন মন্টু। অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেলা ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক অফিসের সহকারী পরিচালক মোঃ মনির উদ্দিন আহমেদ। খুলনা জেলা প্রশাসন ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ পালনের প্রধান লক্ষ্য হলো সকল স্তরের মানুষকে সচেতন করা। এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধ করা মানুষ, সমাজ, দেশ ও বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এবিষয়ে নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যকে সচেতন করা সবার দায়িত্ব। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এ্যন্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করা ঠিক নয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ্যান্টিবায়োটিকসহ যে কোনো ওষুধ কিনতে হলে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন দেখাতে হয়। চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশে কোন ঔষধের দোকানে গিয়ে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এন্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য ঔষুধ সহজেই কেনা যায়। অতিথিরা চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি না করার জন্য ঔষধ ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানান।
সভায় জানানো হয়, কোভিড-১৯ এর চাইতেও বড় যে মহামারী আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে তা হল এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সকে মানব সভ্যতার জন্য ১০ টি শীর্ষ স্বাস্থ্য হুমকির মধ্যে অন্যতম একটি স্বাস্থ্য হুমকি হিসেবে ঘোষণা করেছে। বর্তমানে প্রতিবছর ১২ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষ এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এর কারণে মারা যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সালে মারা যাবে এক কোটি মানুষ। এই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে হাসপাতালে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, ওচঈ এর জাতীয় গাইডলাইন অনুসরণ করা, ঐবধষঃয পধৎব অংংড়পরধঃবফ ওহভবপঃরড়হ সম্পর্কে স্বাস্থ্যকর্মীদের সচেতন করা এবং হাসপাতালে নিরাপদ পানি, পর্যাপ্ত ও পরিচ্ছন্ন শৌচাগার এবং সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এর আগে বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে নগরীর শহিদ হাদিস পার্ক থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
(ঊষার আলো-এফএসপি)