UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গুরুদেবের খপ্পরে স্কুল শিক্ষিকা : কথিত গুরুদেবসহ গ্রেফতার ৩

koushikkln
ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২ ১০:১৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : গর্ভে সন্তান ধারণে সহায়তার উদ্দেশ্যে কথিত গুরুদেবের স্মরণাপন্ন হন স্কুল শিক্ষিকা মিলি হাজরা (৪০)। তাকে তার ব্যবহৃত বিভিন্ন স্বর্ণালংকার নিয়ে নগরীর দোলখোলাস্থ শীতলাবাড়ী মন্দিরে আসতে বলা হয়। সে মোতাবেক তিনি হাজির হলে ১০টি চেইন, ৩ জোড়া চুড়ি, ৬টি আংটি, ৮ জোড়া দুল ও ১টি ব্যাসলেটসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকা মূল্যের মোট ৩৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে চম্পট দেয় গুরুদেব।

মূলত: এরপরই ঘোর কাটে শিক্ষিকা মিলির। বুঝতে পারেন তিনি কথিত গুরুদেবের খপ্পরে পড়ে স্বর্ণালংকার খুঁইয়েছেন। ১৪ ফেব্রুয়ারির এ ঘটনার পর তার স্বামী বাগমারা মেইন রোডস্থ ব্যবসায়ী দিপংকর সাহা বাদি হয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

আতœসাৎকৃত স্বর্ণ, অর্থ মোবাইল, সিম কার্ড
ও ২৫টি জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার

এদিকে, ঘটনার ৫দিন পর তদন্ত শেষে পুলিশ কথিত গুরুদেবসহ ৩ প্রতারককে গ্রেফতার এবং আতœসাৎকৃত স্বর্ণ, অর্থ মোবাইল, সিম কার্ড ও ২৫টি জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খুলনা থানার এসআই (নিঃ) মোহাম্মদ আবু সাঈদ (পিপিএম-সেবা)’র নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার ধামুরা গ্রামের বাজার এবং বরিশাল মহানগরীর কোতয়ালী থানার হারুন প্লাজা মার্কেট থেকে প্রতারকদের গ্রেফতার এবং মালামাল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- বরিশালের উজিরপুর উপজেলার দক্ষিণ ধামুরা গ্রামের আব্দুল কাদের হাওলাদারের পুত্র মোঃ ফারুক হাওলাদার (৪২), একই গ্রামের রফিকুল ইসলাম হৃদয় (৪৫) ও শুনীল কর্মকার (৩২)।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খুলনা থানার এসআই (নিঃ) মোহাম্মদ আবু সাঈদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ১৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে ব্যবসায়ী দিপংকর সাহা ও স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা মিলি হাজরা কোন সন্তানাদি না হওয়ায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি স্ত্রীর কাকার পরামর্শে জনৈক গুরুদেবের সাথে তারা যোগাযোগ করেন। গুরুদেব বাদীর স্ত্রীকে চিকিৎসার কথা বলে সন্তান লাভের প্রলোভন দেখিয়ে সু-কৌশলে তার ব্যবহৃত বিভিন্ন স্বর্ণালংকার নিয়ে দোলখোলা শীতলাবাড়ী মন্দিরে যেতে বলে। বাদীর স্ত্রী জনৈক গুরুদেবের কথামতো বেলা পৌনে ১২টার দিকে শীতলাবাড়ী মন্দিরের সামনে আসলে তার নিকট থাকা স্বর্ণের বিভিন্ন অলংকার প্রতারণার মাধ্যমে কৌশলে আত্মসাৎ করেন।

এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকালে ১৭ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার ধামুরা গ্রামের বাজার ১নং আসামি মোঃ ফারুক হাওলাদার ও রফিকুল ইসলাম হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ফারুকের কাছ থেকে আতœসাৎকৃত স্বর্ণ বিক্রির নগদ ৯৩ হাজার টাকা এবং ঘটনায় ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মডেলের ৫টি মোবাইল ফোন ও ৪টি সিম কার্ড, ১টি স্বর্ণ পরিমাপের যন্ত্র এবং ২৫টি জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী স্বর্ণ ক্রয়ের অপরাধে ১৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল মহানগরীর কোতয়ালী থানাধীন হারুন প্লাজা মার্কেট’র শংকর কর্মকার এর স্বর্ণের কারখানা থেকে শুনীল কর্মকারকে গ্রেফতার করা হয়। পরে শুনীল কর্মকারের স্বীকারোক্তিতে আতœসাৎকৃত ৮৩ দশমিক ৯৭ভরি গলানো স্বর্ণ এবং ১টি স্বর্ণ ক্রয়ের মেমো বই জব্দ করা হয়।

এসআই মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে খুলনায় এনে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে।