UsharAlo logo
শুক্রবার, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশী ডুমুরের একই গোত্রের ভিন্ন প্রজাতির ফল সৌদি আরবের ত্বীন

usharalodesk
মে ৬, ২০২১ ১১:০৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

তীব্র খড়ায়, আট থেকে দশ ডেসি সিমেন পার মিটার লবনাক্ত জমিতেও হবে চাষ

ঊষার আলো প্রতিবেদক : বাংলাদেশের ডুমুরের একই গ্রোত্রের ভিন্ন প্রজাতির ফল সৌদি আরবের ত্বীন। যা এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় চাষ হচ্ছে ত্বীন। ঔষধি গুন সম্পন্ন ও কুরআনে বর্নিত ফল ত্বীন জনপ্রিয়তা পেয়েছে কৃষকের মাঝে। গবেষণায়ও উঠে এসেছে যে তীব্র খড়ায়ও ৮ থেকে ১০ ডেসি সিমেন পার মিটার লবণাক্ত জমিতেও এই ফল টিকে থাকতে পারে।
ডুমুড়িয়ার নিউটন মন্ডল গত বছর রোপন করেন ত্বীনের একটি চারা। একটি চারা থেকে প্রায় পাঁচ হাজার টাকার ফল পান তিনি। আর এ বছর প্রায় তিন লক্ষ টাকা ব্যয় করে বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন ত্বীনের খামার।
তার দেখাদেখি ত্বীনের মিশরিয়ান জাতের বাণিজ্যিক চাষ শুরু করেছে অন্যরাও। তৈরী হচ্ছে চারা বিক্রি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছে ত্বীন চাষে অতিরিক্ত সারের প্রয়োজন হয় না। সারা বছর এর থেকে ফল পাওয়া যায়।
নিউটন মন্ডল জানান, গতবছর দেড় হাজার টাকা খরচ করে একটি গাছ লাগাই। তাতে বছরে পাঁচ হাজার টাকার মত ফল পাওয়া গেছে। একারনে তিন লক্ষ টাকা ব্যায় করে এ বছর ত্বীনের খামার তৈরী করেছেন। এর থেকে ফলের পাশাপাশি চারাও উৎপাদন করছেন তিনি।
অপর একজন চাষী নবদ্বীপ বলেন, ছয় জাতের ত্বীনের বীজ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা মিশরীয় জাত নিয়ে কাজ করছি। এটি চাষে সার ও ঔষধ কম লাগে।
ডুমুড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, সারা বছর এ থেকে ফল পাওয়া যায়, এতে সার ও ঔষধ কম লাগে। এটি বিভিন্ন স্থানে কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।
অপরদিকে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্টের সহযোগিতা বাংলাদেশে ত্বীন চাষের সম্ভাবনা শীর্ষক এক গবেষণায় উঠে এসেছে ত্বীন ফল ৮ থেকে ১০ ডেসি সিমেন পার মিটার লবণাক্ত জমিতেও চাষ করা সম্ভব। তীব্র ক্ষরায়ও এই ফল টিকে থাকতে পারে। ইতিমধ্যে এটি কৃষকের মধ্যে পেয়েছে জনপ্রিয়তাও।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের, পিএইচডি ফেলো রুবায়েত আরা বলেন, আমাদের গবেষণার বিষয় ছিল, এটি আমাদের দেশের জলবায়ূতে চাষ করা সম্ভব কিনা ও সাধারণ কৃষকেরা এটি পছন্দ করবে কিনা। আমরা দেখছি এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। খুলনা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে চাষ হচ্ছে।
এ্যাগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ড. এস এ কামাল উদ্দিন খান বলেন, আমাদের দেশের ডুমুর এর সাথে মিল রয়েছে ত্বীনের। এটি ডুমুরের একই গোত্রের ভিন্ন প্রজাতির ফল। আমাদের দেশে এটি চাষ করা সম্ভব। এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে যে তাপমাত্রা ও লবনাক্ততা বাড়ছে, সেখানেও এটি চাষ করা সম্ভব।
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে ত্বীন ফল ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একটি গাছ থেকে ৫ কেজির উপরে ফল পাওয়া যায়।

(ঊষার আলো-এমএনএস)