ঈদের ছুটি কাটিয়ে প্রথম কর্মদিবসে অফিসে এসেই স্ট্রোক করে মারা গেলেন খুলনা জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ শামসুল হক। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর বয়রায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। তবে সহকর্মীরা একে স্বাভাবিক মৃত্যু মানতে নারাজ। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সাংবাদিক পরিচয় দানকারী ৪ জন বহিরাগত একটি তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের বিষয়ে তার ওপর চাপ প্রয়োগ ও বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হওয়ার এক পর্যায়ে তিনি স্ট্রোক করেন।
বাদ আসর মরহুম মোহাম্মদ শামসুল হকের জানাজা শিক্ষা অফিস চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, খুলনা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুলসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষাবিভাগের সহকর্মীবৃন্দ জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে তার মরদেহ রাজশাহীর পবায় গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।এ সময় শামসুল হকের সহকর্মীদের মধ্যে ছিল চাপা ক্ষোভ। উপস্থিত জনসাধারণ ও সাংবাদিকদের সামনে তারা মুখ খুলতে নারাজ ছিলেন। তবে প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের কাছে জানিয়েছেন ঘটনার বিস্তারিত।
জানা গেছে, খুলনা ডুমুরিয়া উপজেলার এ কে বি কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের জুন মাসে আয়া পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন বীথিকা রানী রায়। নিয়োগটি বিধিমোতাবেক হয়নি বলে উপ-পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খুলনা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন দেবাশীষ মন্ডল ও অমিত মন্ডল নামে দুই ব্যক্তি। অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ সামছুল হক। তদন্তে গিয়ে দেখেন অভিযোগকারীদের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে যথা সময়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারেননি।
রোববার বেলা ১১টার দিকে দু’টি টিভি চ্যানেল ও একটি স্থানীয় দৈনিক সংবাদপত্রের সাংবাদিক ও তাদের এক সহযোগীকে নিয়ে শামসুল হকের কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা তদন্ত রিপোর্টটি দ্রুত জমা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এ সময় ওই রুমে ওই চার সাংবাদিক ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না। এর আগেও এই বিষয়ে কথা বলতে তারা ৩/৪ বার তার কাছে এসেছিলেন। কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি সহকর্মী পরিদর্শক বাবুল হাওলাদারকে রুমে ডাকেন। বাবুল রুমে প্রবেশ করতেই তিনি বলেন, ‘দেখেন তো সাংবাদিকরা কি দাবি করছেন?’ এ কথা বলেই তিনি মাথা চেপে ধরে ঢলে পড়েন। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণাকরেন।
এ বিষয়ে জানতে খুলনা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মো: কামরুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ঊআ-বিএস