রাহাদ সুমন, বানারীপাড়া(বরিশাল) প্রতিনিধি : বরিশালের বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা ও এর শাখা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ডিমওয়ালা মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব চলছে।
উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের ঢিলেঢালা অভিযানের কারণে রাত-দিন প্রকাশ্যে শত শত জেলে নৌকায় জেলেরা কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে এ মা ইলিশ শিকার করছেন।
নিষেধাজ্ঞার প্রথম রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহা ও মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে সন্ধ্যা নদীতে অভিযান চালিয়ে ৯ জেলেকে আটক করে মোবাইল কোর্টে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়ায় ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষার বিষয়ে এলাকাবাসী আশার আলো দেখতে পেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে অভিযান চলছে দায়সারা গোছের নামকাওয়াস্তে।
এদিকে, অভিযানে জব্দ হওয়া বিপুল পরিমানের ইলিশ ইয়াতিম খানায় বিতরণের কথা বলে অভিযানে থাকাদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা মৎস্য সমিতির সভাপতি ও বানারীপাড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য সুধীর রঞ্জন অভিযোগ করে জানান, ঢিলেঢালা অভিযানের সুযোগে রিল্যাক্স মুডে জেলেরা সন্ধ্যা নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে মা ইলিশ নিধন করছেন।
ইলিশের এ প্রজনন মৌসুমে ইলিশ নিধনের এ মহোৎসবের বিষয়ে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের ঢিলেঢালা অভিযানকে তিনি দায়ী বলেন জেলেরা নিধন করা এসব মা ইলিশ স্বল্প মূল্যে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে ফেরী করে বিক্রি করছেন।
উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর এসব মাছ বিক্রির কথা জেনেও না জানার ভান করে সন্ধ্যা নদীতে দায়সারা অভিযান পরিচালনা করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এদিকে এলাকার সচেতন মহল জানান, সন্ধ্যা নদীর মা ইলিশ রক্ষা করতে হলে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের চলমান অভিযান আরও জোরদার ও কঠোরতর করতে হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, অভিযানের শুরুতেই তারা একটি ও পরবর্তীতে দুটি ট্রলারে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছেন। এরপরও তারা সন্ধ্যা নদী থেকে জেলেদের মা ইলিশ নিধন বন্ধ করতে পারছেন না।
তিনি বলেন,অপ্রতুল বরাদ্দ, জনবল ও পুলিশ সংকটের কারণে তারা অভিযান জোরদার করতে পারছেন না। এ বিষয়ে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, নিয়মিত তার পুলিশ সন্ধ্যা নদীতে মৎস্য অভিযানের দুটি টিমে ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করছেন।
এছাড়া, বাকি পুলিশ এলাকার আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখার জন্য শারদীয় দুর্গোৎসবে ডিউটি করছেন। এ মুহূর্তে তার কাছে অতিরিক্ত পুলিশ না থাকায় মৎস্য অভিযানে তিনি বাড়তি পুলিশ দিতে পারছেন না বলে জানান।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহা বলেন, সন্ধ্যা নদীর মা ইলিশ রক্ষার শুরুতেই তার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে দাসেরহাট এলাকা থেকে ৯ জনকে আটক করে এক বছর ও একদিন পর নলশ্রী এলাকা থেকে আরও চারজনকে আটক করে মোবাইল কোর্টে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এরপরও মা ইলিশ নিধন থামছে না। তিনি বলেন, সন্ধ্যা নদীতে মৎস্য অভিযান পরিচালনা বৃদ্ধি করতে হলে আরও পুলিশ প্রয়োজন।
(ঊষার আলো-আরএম)